ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে দৈনন্দিন কাজ

ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে বেরিয়ে এসেছে রড l প্রথম আলো
ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে বেরিয়ে এসেছে রড l প্রথম আলো

ছাদের বেশির ভাগ অংশের খসে পড়েছে পলেস্তারা। জং ধরা রড বেরিয়ে আছে। কক্ষের দেয়ালের স্থানে স্থানে ফাটল। বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। এ চিত্র সাতকানিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের। এমনই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে প্রতিদিনের কাজ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) সাতকানিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, ষাটের দশকে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ২০০০ সালের দিকে এটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। উপজেলা পরিষদের পর্যাপ্ত ভবন ও কক্ষের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের কাজকর্ম চালানো হচ্ছে।

গত ২৭ নভেম্বর দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, দোতলা ভবনের নিচতলার কয়েকটি কক্ষ সাতকানিয়া পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দ্বিতীয় তলায় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়। এই কার্যালয়ে ওঠার সিঁড়িতেও বড় বড় ফাটল। কক্ষের কয়েকটি জানালার কাঠ ভেঙে গেছে। বৃষ্টির পানি আটকানোর জন্য দুটি জানালা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কর্মচারী করিম আল মাহমুদ ছিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো ভবন। দুর্ঘটনার ভয় নিয়েই প্রতিদিন কাজ করতে হচ্ছে। ভবনের ছাদের দিকে তাকালে মনে হয় এই বুঝি মাথার ওপর পলেস্তারা খসে পড়বে।

উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনির আহমদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়নসংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে যেতে হয়। কিন্তু ওই কার্যালয়ের ভাঙাচোরা অবস্থা দেখে ভেতরে ঢুকতে মন সায় দেয় না।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কর্মকর্তা মো. সেলিম হেলালী বলেন, এ ভবন থেকে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে। কিন্তু উপজেলা পরিষদের ভবনগুলোতে কোনো কক্ষ খালি না থাকায় অন্যত্র স্থানান্তর হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের ভবনগুলোর মধ্যে কয়েকটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়টি ধরতে গেলে পরিত্যক্ত। কক্ষের অভাবে ওই পরিত্যক্ত ভবনেই কাজ করতে হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে নতুন করে ভবন তৈরির জন্য পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি আগামী অর্থবছরে উপজেলা পরিষদে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হবে।

উপজেলার স্থানীয় সরকার কার্যালয়ের প্রকৌশলী পারভেজ সারোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলা পরিষদের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে ৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই দরপত্র আহ্বান করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন ভবন নির্মাণ হলে সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের সব কার্যালয় একই ছাদের নিচে স্থান পাবে।