একুশে বইমেলায় দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ শ্রাবণ প্রকাশনী

বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় শ্রাবণ প্রকাশনীকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ‘একাডেমির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা’ করায় ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলে বইমেলা কমিটির সচিব জানিয়েছেন।
শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবিন আহসান প্রথম আলোকে জানান, আসন্ন অমর একুশে বইমেলায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রকাশনা সংস্থা শ্রাবণের প্রতিনিধি সোমবার (আজ) বাংলা একাডেমির কাছে আবেদনপত্র সংগ্রহ করার জন্য গিয়েছিল। এ সময় বাংলা একাডেমি থেকে তাদের জানানো হয়, দুই বছরের জন্য বইমেলায় অংশ নিতে পারবে না শ্রাবণ।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাংলা একাডেমি বইমেলা কমিটির সচিব জালাল আহমেদ বলেন, গত ১০ নভেম্বর বাংলা একাডেমির কাউন্সিলের সভায় শ্রাবণ প্রকাশনীকে বইমেলায় দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বইমেলায় বাংলা একাডেমি পরিস্থিতি বিবেচনায় ‘ইসলাম বিতর্ক’ নামে একটি বই নিষিদ্ধ করেছিল। আর একাডেমির সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবিন আহসান; যা বাংলা একাডেমির বইমেলার স্বার্থের পরিপন্থী। আর এ জন্য বৃহত্তর স্বার্থে বাংলা একাডেমির বইমেলায় শ্রাবণ প্রকাশনীকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নিষিদ্ধ করার বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে কাল মঙ্গলবার দুপুরে বাংলা একাডেমির সামনে প্রতিবাদ সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবিন আহসান। তিনি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশে আমি কী বিষয়ে কথা বলব, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আমার আছে। এমন তো নয় যে আমি মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাবিরোধী কোনো কথা বলেছি! বইমেলার মতো মুক্তবুদ্ধির চর্চার একটি ক্ষেত্র থেকে কেবল বই প্রকাশের অপরাধে একজন প্রকাশককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হলো। আমি মনে করেছি, এর প্রতিবাদ হওয়া উচিত। তাই প্রতিবাদ করেছি।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬-এর বইমেলা চলাকালীন ‘ইসলাম বিতর্ক’ বই প্রকাশের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ওই বইয়ের লেখক-প্রকাশকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওই সময়ে ‘ইসলাম বিতর্ক’ বইটিতে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ হানার উপাদান রয়েছে বলে দাবি করে বাংলা একাডেমির সায় নিয়ে একুশের বইমেলায় ব-দ্বীপের স্টলটিও বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ।