ছাড়া পেলেন মেয়র আরিফুল

সাবেক অর্থমন্ত্রী এ এম এস কিবরিয়া হত্যাসহ চার মামলায় জামিনের পর আজ বুধবার মুক্তি পান সিলেটের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আনিস মাহমুদ
সাবেক অর্থমন্ত্রী এ এম এস কিবরিয়া হত্যাসহ চার মামলায় জামিনের পর আজ বুধবার মুক্তি পান সিলেটের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আনিস মাহমুদ

সাবেক অর্থমন্ত্রী এ এম এস কিবরিয়া হত্যাসহ চার মামলায় জামিন পাওয়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মুক্তি পেয়েছেন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

২০১৩ সালের ১৫ জুন সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার প্রায় দেড় বছরের মাথায় আরিফুল হক ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর কারাবন্দী হন। দুই বছর পাঁচ দিন পর তিনি জামিনে মুক্তি পেলেন। কারাবন্দী হওয়ার পর ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি তাঁকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ সুপার ছগির আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, জামিনসংক্রান্ত কাগজপত্র বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কারাগারে পৌঁছায়। এগুলো যাচাই-বাছাই করে ৫টা ১০ মিনিটে মুক্তি দেওয়া হয়।

বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে হুইলচেয়ারে করে আরিফুল হককে কেন্দ্রীয় কারা ফটকের সামনে আনা হয়। ফটকের সামনে অপেক্ষায় থাকা সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও বিএনপি, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ জনতা তাঁকে বরণ করে। তাঁকে ফুলের মালা দিয়ে এ সময় ‘আরিফ ভাই, আরিফ ভাই...’ বলে স্লোগান দেয় উপস্থিত জনতা। এ সময় তিনি জিপ গাড়িতে উঠে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের কাছে কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করলেও হাত নেড়ে দোয়া চান।
গাড়িতে যাওয়ার সময় মোবাইলে আরিফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমাকে দুই বছরের বেশি সময় জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। জনগণের দোয়ায় আমি মুক্ত হয়েছি।’

কেন্দ্রীয় কারা ফটকের সামনে একটি জিপ গাড়ি দিয়ে আরিফুল হক হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর দরগাহ যান। সেখানে মাগরিবের নামাজ পড়ে জেয়ারত শেষে কুমারপাড়ায় বাসায় ফেরেন।

আরিফুল হক চৌধুরী ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জয়ী হন। হবিগঞ্জে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ওপর জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হিসেবে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর কারাবন্দী হন। এরপর থেকে তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাঁকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

আদালত সূত্র জানায়, উচ্চ আদালত থেকে কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা দুটোর জামিন পেলে সম্পূরক আরেকটি অভিযোগপত্রে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় গ্রেনেড হামলার মামলায় অভিযুক্ত হন মেয়র আরিফুল হক। এ মামলায় গত বছরের ১১ ডিসেম্বর আরিফুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর এ মামলা থেকেও তিনি জামিন পেলে পরে তা স্থগিত করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে জামিন স্থগিত বিষয়ে শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার তা বহাল রাখা হয়।