ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হলো ঢাকার সাত কলেজ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সরকারি কলেজগুলোকে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে।

কলেজগুলো হচ্ছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ১ লাখ ৬৭ হাজার ২৩৬ জন শিক্ষার্থী ও ১ হাজার ১৪৯ জন শিক্ষক রয়েছেন।

গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তরসংলগ্ন লাউঞ্জে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে বৈঠকে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জাম হোসেন মোল্লাহ, ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ গায়ত্রী চ্যাটার্জী, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ শেখ আবদুল কুদ্দুস, কবি নজরুল সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুক্তি রানী সাহা, বদরুন্নেসা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দীপিকা দেওয়ান, মিরপুর বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইমাম হোসেন, তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ আবু হায়দার আহমেদ নাছের ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, এখন থেকে অধিভুক্ত এই কলেজগুলোর ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি–প্রক্রিয়া ও পরীক্ষা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিচালিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুযায়ী এগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

২০১৪ সালের ৩১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাপ কমাতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন। পরে ওই বছরের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের নিয়ে সভা হয়। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা কলেজগুলোকে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিতে একমত হন। কিন্তু কাছাকাছি সময়েই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেশনজট কমাতে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ ঘোষণা করে। কিন্তু এই ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রামের’ মাধ্যমে দ্রুত পরীক্ষা হলেও ঠিকমতো ক্লাস না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’সহ বিভিন্ন কারণে সরকারি কলেজগুলোকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার কাজের গতি কমে যায়। এর মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তাগিদ দেয়।

বর্তমানে দেশে স্নাতক পর্যায়ের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় অর্ধেক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন দুই হাজারের বেশি কলেজে পড়ছেন। এগুলোতে মোট শিক্ষার্থী প্রায় ২১ লাখ। সরকারি প্রায় ২০০ ও বেসরকারি প্রায় ৫০০ কলেজে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয়।

রাজধানীর এই সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাকি সরকারি কলেজগুলোও পর্যায়ক্রমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হবে।

একসময় স্নাতক পড়ানো হয়—এমন কলেজগুলো কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীভুক্ত ছিল।