বাইসাইকেলে বরযাত্রা!
সাইকেল চালানো তাঁর কাছে নেশার মতো। পরিবেশবান্ধব বাইসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ জোগাতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তিনি। সাইকেলে ঘুরেছেন দেশের ৬৪ জেলা। এবার তিনি বর বেশে সাইকেল চালিয়েই গেলেন বিয়ে করতে! শুধু তিনি একা নন, তাঁর সহযাত্রী হিসেবে বরযাত্রায় বাইসাইকেল আরোহী ছিলেন আরও অনেকে।
আজ মঙ্গলবার খুলনা শহরে দেখা গেল এই অভিনব বরযাত্রা। নগরের গল্লামারী থেকে বসুপাড়া পর্যন্ত পুরো পথ শেরওয়ানি পাগড়ি পরে বর নিজে গাঁদা ফুলে সাজানো একটি বাইসাইকেল চালিয়ে যান। সাইকেলের সামনে একটি ছোট ব্যানারে লেখা ছিল, ‘সাইকেল চালান, পরিবেশদূষণ কমান’। নিচে লেখা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে, যানজট কমাতে ও এড়াতে, পরিবেশ বাঁচাতে চালান সাইকেল।
বরের মতো আরও অনেক তরুণও ব্যতিক্রমী এই বাইসাইকেল বরযাত্রায় শামিল হন। পুরো যাত্রাপথে কৌতূহলী মানুষ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন ব্যতিক্রমী এই বরযাত্রার দৃশ্য। বরযাত্রায় নারী ও শিশুদের জন্য ছিল মাইক্রোবাসের ব্যবস্থা।
এই বর হলেন শেখ মো. শরিফুল ইসলাম হিরণ। তিনি নগরের গল্লামারী এলাকার একটি ‘ক্যাফে অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট’–এর মালিক। পাশাপাশি তিনি একজন সাইক্লিস্ট এবং ‘খুলনা সাইক্লিস্ট’ নামের একটি গ্রুপের অন্যতম মডারেটর। এই গ্রুপের সদস্যরা পরিবেশবান্ধব যান হিসেবে বাইসাইকেলকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। শরিফুল ডুমুরিয়া উপজেলার রাজিবপুর গ্রামের রাশিদুল ইসলাম ও তহমিনা বেগম দম্পতির ছেলে। কনে তাসনিয়া তাবাসসুমের বাড়ি নগরের পুরাতন গল্লামারী রোডে।
বরযাত্রীদের একজন বাহারুল ইসলাম বলেন, এ রকম একটি অভিনব বরযাত্রার সাক্ষী হতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। রাস্তায় মানুষের কৌতূহল ও উৎসাহ সেই আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসার পাশাপাশি সাইক্লিং আমার নেশা। অনেক দিন আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম বিয়ে করব সাইকেলে চেপে। আমরা মাঝেমধ্যেই দল বেঁধে সাইকেলে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে বেরিয়ে পড়ি। তাহলে সাইকেল চালিয়ে বিয়ে করতে যেতে সমস্যা কোথায়? এই ভাবনা থেকেই খুলনা সাইক্লিস্টসের অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরিকল্পনা করি। আর সেটারই বাস্তবায়ন করলাম আজ।’