বসুন্ধরায় পরিস্থিতি শান্ত, কেউ মামলা করেনি

নিরাপত্তাকর্মীদের মারধরে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এক ছাত্র আহত হওয়ার পর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর গতকাল শুক্রবার ওই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পরিস্থিতি ছিল শান্ত। বিশ্ববিদ্যালয় গতকাল বন্ধ ছিল। আগের দিনের ভাঙচুরের ঘটনায় বসুন্ধরা বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো মামলা বা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, আজ শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। প্রতিষ্ঠানটিতে আজ সন্ধ্যাকালীন স্নাতকোত্তর ক্লাস হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল সকাল থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসুন্ধরা গ্রুপের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি প্রতিটি ফটকে পুলিশ ও র্যাবের কঠোর নিরাপত্তা ছিল। তবে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচল কম ছিল।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের অবস্থান বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতরে।
রাতে যোগাযোগ করা হলে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল মোত্তাকীন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে কারও পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহরিয়ার হাসনাত ওরফে তপুসহ তিন ছাত্র বসুন্ধরায় অ্যাপোলো হাসপাতালের ফটকে মোটরসাইকেল রাখতে গেলে সেখানে নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দেন। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীরা শাহরিয়ারসহ তিন ছাত্রকে পেটান। খবর পেয়ে নর্থ সাউথের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের ওপরও চড়াও হন। আহত ছাত্র চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। পরদিন বৃহস্পতিবার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, শিক্ষার্থীরা কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে ভাঙচুর করে।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থী টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কয়েকটি পত্রিকা আন্দোলনকারীদের জঙ্গি বলে মিথ্যা প্রচারণা চালানোয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর বিরুদ্ধে তাঁরা আগামীকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করবেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক (জনসংযোগ) বেলাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়, বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ বৈঠকে বসে। বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ায় ছাত্ররা ক্যাম্পাসে ফিরে গেছেন। তাঁরা এ বৈঠকের ওপর আস্থা রেখেছেন। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে।
তবে বসুন্ধরা গ্রুপের তথ্য ও গণমাধ্যম উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ছাত্রদের বিরুদ্ধে তাঁর কোনো বক্তব্য নেই। ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদের আপস হয়েছিল। তবে মুখোশ পরে উসকানিমূলক আক্রমণ কারা করেছে, তদন্ত করে বের করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো মামলা করা হবে কি না জানতে চাইলে তৈয়ব বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’