ডাকাতের ছুরিতে গৃহস্থ খুন, সংঘর্ষে নিহত আরও ১

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে জিলু মিয়া (৬০) নামের এক গৃহস্থ খুন হয়েছেন। এ সময় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী এক ডাকাতকে আটক করে গণপিটুনি দেওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মফিজুর রহমান (৫৫) নামের এক কৃষক নিহত হন।
সংঘর্ঘে ১০ পুলিশ সদস্য ও এক স্কুলছাত্রীসহ আহত হন ২২ জন। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের মধ্যরাজনগর গ্রামে গতকাল শনিবার সকালে এসব ঘটনা ঘটে।
ডাকাতের ছুরিকাঘাতে নিহত জিলুর বাড়ি মধ্যমরাজনগরের পূর্বপাড়ায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মফিজুরের বাড়ি দক্ষিণ রাজনগর গ্রামে। গ্রামবাসীর পিটুনি থেকে উদ্ধার করা ডাকাত দলের সদস্য হলেন সোনাই মিয়া ওরফে সোনাই সরদার (৪০)। তাঁর বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার লাকি গ্রামে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের আহত ১০ সদস্যের মধ্যে চারজনকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত স্কুলছাত্রী সাবিহা খাতুনকেও (১৫) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষ থামাতে ৬৪টি রাবার বুলেট ও একটি চায়না রাইফেলের গুলি ছুড়তে বাধ্য হয় পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মুখোশধারী ডাকাত দল জিলুর বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় চিৎকার শুনে পাড়ার লোকজন বাড়িটি ঘিরে ফেলে। ডাকাতেরা তখন জিলুকে ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ডাকাত সোনাইকে আটক করে গ্রামবাসী। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে জিলু মারা যান। এ খবরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সোনাইকে মারধর করে রাজনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সকাল নয়টার দিকে পুলিশের চার সদস্য ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের সামনেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সোনাইয়ের চোখে চুনপানি দিতে শুরু করলে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এ অবস্থায় থানা থেকে আরও ১২ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা সোনাইকে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, পুলিশ গুলি ছুড়লে ধানখেতে কাজ করা অবস্থায় মফিজুর নিহত হন। পরে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলতাফ হোসেন ও পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিনের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সোনাইকে উদ্ধার করতে গেলে আরেক দফা সংঘর্ষ হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক রুহুল আমিন বলেন, আটক সোনাইকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত দুজনের লাশ একই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি আলতাফ হোসেন বলেন, জিলু মিয়ার ঘর থেকে ডাকাতদের ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যদের বর্ণনা থেকে ডাকাত দলের নাম ও পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। গোয়াইনঘাট থানায় সোনাইয়ের বিরুদ্ধে ১৬টি ডাকাতির মামলা রয়েছে।