১১৩ বছরে লাল রঙের বিদ্যালয়টি

পুরোনো ছবি
পুরোনো ছবি

পুরান ঢাকার বংশালের আবুল খয়রাত সড়কের লাল রঙের এই পুরোনো ভবন যে কারও দৃষ্টি আকৃষ্ট করবে। ভবনের ওপর লেখা, ১৯০৪। প্রথম দেখায় ব্রিটিশ আমলের কোনো সরকারি দপ্তর মনে হলেও এটি আসলে আরমানিটোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়। সামনে বড় খোলা মাঠ আর ছায়াদায়ী দেবদারুগাছ। বিদ্যালয়ের প্রাচীন কাঠের সিঁড়ি, গ্যালারি ও গ্রন্থাগার আজও বিদ্যমান। ঢাকা নগর জাদুঘরে এই স্কুলের পুরোনো ভবনের একটি ছবি পাওয়া গেল।

বর্তমান ছবি
বর্তমান ছবি

ইতিহাসবিদ শরিফ উদ্দিন আহমেদ সম্পাদিত ঢাকা কোষ-এ বলা হয়েছে, তৎকালীন পূর্ববঙ্গের একমাত্র শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ের (বিএড কলেজ) পরীক্ষামূলক স্কুল হিসেবে ১৯০৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আরমেনিয়ানদের স্মৃতিবিজড়িত আরমানিটোলায় অবস্থিত এই স্কুলটি আড়াই একর জমির ওপর ব্রিটিশ স্থাপত্যরীতিতে তৈরি। স্কুলের সামনেই ঐতিহাসিক তারা মসজিদ। প্রথম পর্যায়ে স্কুলটি তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন জে ই হুইটেকার। বাংলাদেশের বিশ্ববিখ্যাত স্থপতি এবং পৃথিবীর অন্যতম উচ্চ ভবন শিকাগোর সিয়ার্স টাওয়ারের নকশা প্রণয়নকারী এফ আর খান ১৯৪৪ সালে এই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। এ ছাড়া ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ (অব.), জাতীয় অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান, কবি আসাদ চৌধুরীসহ অসংখ্য কীর্তিমান এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ১৯৯৬ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়। বর্তমান পরীক্ষাপদ্ধতিতেও পাসের হার প্রায় শতভাগ। তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৯০০ শিক্ষার্থী বং ৫৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। ‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’ এই নীতিবাক্য নিয়ে স্কুলটি শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। লেখা: শরিফুল হাসান। ছবি: হাসান রাজা