মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে শিক্ষক-সংকট

মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে শিক্ষক-স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। কলেজটিতে ২৪ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এদিকে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালুর এক যুগ এবং স্নাতকোত্তর কোর্স চালুর অর্ধযুগ পেরিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়নি।
স্নাতকোত্তর চালু হওয়া পাঁচটি বিভাগে দেখা দিয়েছে তীব্র শিক্ষক-সংকট। এ কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হচ্ছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৬ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত কলেজটি ১৯৮০ সালে সরকারি হয়। ১৯৯৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে ১৪টি বিষয়ে সম্মান (অনার্স) কোর্স চালু হয়। বর্তমানে কলেজে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার। কলেজে ৭৯ জন শিক্ষকের মধ্যে ২৪ জনের পদ শূন্য।
নিয়ম অনুযায়ী সম্মানের প্রতিটি বিভাগে সাতজন করে শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু সম্মান কোর্স চালুর এক যুগ পেরিয়ে গেলেও প্রয়োজনীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়নি। শুধু বাংলা ও ইংরেজি বিভাগে সাতটি করে পদ আছে। এর মধ্যে বাংলা বিভাগেই অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষকের পদ শূন্য। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, ইতিহাস ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগে তিনজন করে এবং অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, গণিত বিভাগে চারজন করে শিক্ষক রয়েছেন। এ ছাড়া দর্শন বিভাগে মাত্র একজন সহকারী অধ্যাপক কর্মরত আছেন।
২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু হয়েছে। বিভাগগুলো হচ্ছে বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান। নিয়ম অনুযায়ী স্নাতকোত্তরের প্রতিটি বিভাগে ১২ জন করে শিক্ষকের পদ থাকার কথা। বর্তমানে শিক্ষক-সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে।
অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অভিযোগ, কয়েকজন শিক্ষক নিয়মিত কলেজে অনুপস্থিত থাকেন।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল মুনিম বলেন, ডিগ্রি (পাস কোর্স) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অপর দিকে মাত্র পাঁচটি বিভাগে স্নাতকোত্তর চালু হয়েছে। বাকি বিষয়ে স্নাতকোত্তর না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছেন না। এ ছাড়া বিভাগগুলোতে শিক্ষকদের পদ সৃষ্টি না হওয়ায় পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে।
কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আকবর ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, কলেজে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক-স্বল্পতা আছে। এতে পড়ালেখায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে। স্নাতকের অনেক বিভাগে এখনো প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি হয়নি। স্নাতকোত্তরের কোনো বিভাগেই প্রয়োজনীয় পদ নেই। পদ সৃষ্টির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রেণীকক্ষের সংকটও তীব্র।অধ্যক্ষ আরও বলেন, কয়েকজন শিক্ষক কর্মক্ষেত্রে খুব একটা সময় দেন না। অতীতে অনেককে এ কারণে সতর্কতামূলক চিঠি দেওয়া হয়েছে।