দেশে ২৬ লাখ বেকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ফটক খোলার অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা ছবি: সাইফুল ইসলাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ফটক খোলার অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা ছবি: সাইফুল ইসলাম

দেশে বেকারের সংখ্যা এখন ২৬ লাখ। নারী ও পুরুষ—উভয়েই ১৩ লাখ করে বেকার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ত্রৈমাসিক শ্রমশক্তি জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।

আজ রোববার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বিবিএস। আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিবিএস।
এই বিশাল বেকার জনগোষ্ঠী সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগও পায় না। বেকারত্বের এই হিসাব আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) দেওয়া মানদণ্ড অনুযায়ী। আইএলও মনে করে, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ না করলে ওই ব্যক্তিকে বেকার হিসাবে ধরা হয়।
বিবিএসের হিসাবে, উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি—৯ শতাংশ। এর মানে হলো স্নাতক কিংবা এর বেশি ডিগ্রিধারী প্রতি ১০০ জনে ৯ জন বেকার। এ দেশে পড়াশোনা না করলেই কাজ পাওয়ার সুযোগ বেশি। কোনো ধরনের শিক্ষার সুযোগ পাননি, এমন মানুষের মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ বেকার। ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী কর্মক্ষম তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ১০ শতাংশে বেশি বেকার। ২০১৩ সালের শ্রমশক্তি জরিপের হিসাবে, দেশে তখন বেকারের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৯০ হাজার।
বিবিএসের জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা ৫ কোটি ৯৫ লাখ। এর আগের ২০১৩ সালের জরিপে এই সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৮১ লাখ। বিবিএস বলছে, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত দেড় বছরে কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ১৪ লাখ; যা নতুন কর্মসংস্থান বলে মনে করে বিবিএস।
জরিপ ফলাফলের ওপর আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বরকত ই খুদা ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান।
বরকত ই খুদা বলেন, এই শ্রমশক্তি জরিপ থেকে আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছু পাইনি। এখনো শ্রমশক্তিতে অপেক্ষাকৃত কম দক্ষ মানুষ বেশি, তাঁরা মজুরি কম পান। এর মানে হলো আমরা শোভন কাজ বা চাকরি দিতে পারছি না। এ ছাড়া প্রতিবছর কমপক্ষে ১০ লাখ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। কিন্তু তাঁদের জন্য কাজ দেওয়ার সুযোগ সীমিত।
রুশিদান ইসলাম রহমান বলেন, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশ বাড়লেও তা এখনো কম। নারীর অংশগ্রহণ এখনো মোট শ্রমশক্তির এক-তৃতীয়াংশ। তিনি মনে করেন, ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে শ্রমশক্তি জরিপ করা হলে কর্মসংস্থান কৌশল নির্ধারণে নীতিনির্ধারকদের জন্য সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক, বিবিএস মহাপরিচালক আমির হোসেন, শিল্প ও শ্রম শাখার পরিচালক ঘোষ সুবব্রত। জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন বিবিএসের যুগ্ম পরিচালক কবির উদ্দিন আহমেদ।