দুই কর্মকর্তাসহ চার সেনা নিহত

মেজর মাহফুজ ও ক্যাপ্টেন তানভীর
মেজর মাহফুজ ও ক্যাপ্টেন তানভীর

রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের পর উদ্ধারকাজ চালানোর সময় গতকাল মঙ্গলবার দুই কর্মকর্তাসহ চার সেনাসদস্য নিহত হন। আরও ১০ জন সেনাসদস্যকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। আরও একজন সেনাসদস্য নিখোঁজ রয়েছেন। সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক গতকাল বিকেলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ পরিদর্শন করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, গতকাল ভোরে রাঙামাটির মানিকছড়িতে একটি পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে রাঙামাটি জোন সদরের নির্দেশে মানিকছড়ি আর্মি ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে যায়। তাঁরা সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। উদ্ধারকাজ চলার সময় বেলা ১১টার দিকে পাহাড়ের একটি বড় অংশ উদ্ধারকারীদের ওপর ধসে পড়লে তাঁরা মূল সড়ক থেকে ৩০ ফুট নিচে পড়ে যান। পরে একই ক্যাম্প থেকে আরও একটি উদ্ধারকারী দল এসে দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার সেনাসদস্যকে নিহত এবং ১০ সেনাসদস্যকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক গতকাল বিকেলে সেখানে যান। তিনি হতাহত সব সেনাসদস্য ও তাঁদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, আহত সেনাসদস্যদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় সিএমএইচে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধারকাজ চালানোর সময় ভূমিধসে আটকা পড়া সেনাসদস্য সৈনিক আজিজুর রহমান নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি ২০০৫ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
নিহত সেনাসদস্যরা হলেন মেজর মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। বাড়ি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে। তিনি ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে যোগদান করেন এবং ৪৪ বিএমএ লং কোর্সের সঙ্গে কমিশন পান। তিনি বিবাহিত এবং পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলের জনক। ক্যাপ্টেন মো. তানভীর সালামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলে। তিনি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন। ৬৪ বিএমএ লং কোর্সের মাধ্যমে তিনি কমিশন পান। করপোরাল মোহাম্মদ আজিজুল হকের জন্ম ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। সৈনিক মো. শাহিন আলমের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘিতে। তিনি ২০০৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। বিবাহিত এবং এক ছেলের বাবা।
গত তিন দিনের প্রবল বর্ষণের ফলে গতকাল থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধস শুরু হয়। এতে করে পুরো এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে প্রচণ্ড বৃষ্টিতে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হয়।