জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সবাইকে কাজ করতে হবে

জনসংখ্যাকে সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি নারী-পুরুষ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশের জনসংখ্যাকে জনসম্পদ হিসেবে কাজে লাগাতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ ভন্ডুল হয়ে যাবে।

আজ সোমবার বিকেলে প্রথম আলো ও ইউএনএফপিএ আয়োজিত ‘পরিবার পরিকল্পনা: জনগণের ক্ষমতায়ন, জাতির উন্নয়ন’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

গোলটেবিলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ঢাকায় বন্ধ কক্ষে জনসংখ্যাবিষয়ক সভা না করে বস্তি, মফস্বল, জেলা বা উপজেলায় করতে হবে। এতে মানুষ আরও বেশি সচেতন হবে। এ ধরনের স্থানে আলোচনা হলে তিনিও অংশ নেবেন বলে জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব সময় শুনে এসেছি, ছোট পরিবার সুখী পরিবার। আর এ ক্ষেত্রে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভালো ভূমিকা রাখছে। জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জনগণ জনশক্তিতে রূপান্তর হলে দেশের উন্নয়ন হবে।’

গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছি। এটি নতুন করে গুরুত্ব দিয়ে দেখা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ ভন্ডুল হয়ে যাবে।

সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ২৭ লাখ। নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পুরুষদেরও সচেতন হতে হবে বলে। এ ছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক খিজির হায়াত খান বলেন, ‘আমরা ইমামদের জন্মনিয়ন্ত্রণ-বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। তিনি বলেন, ২ লাখ ৭৫ হাজার মসজিদের ইমামদের এ-সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলাফলও পেতে শুরু করেছি। সমন্বিত উদ্যোগ হলে এটি আরও কার্যকরভাবে সমাধান করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

প্রথম আলো ও ইউএনএফপিএ আয়োজিত ‘পরিবার পরিকল্পনা জনগণের ক্ষমতায়ন, জাতির উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা। ছবিটি সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয় থেকে তোলা। ছবি: আবদুস সালাম
প্রথম আলো ও ইউএনএফপিএ আয়োজিত ‘পরিবার পরিকল্পনা জনগণের ক্ষমতায়ন, জাতির উন্নয়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অতিথিরা। ছবিটি সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয় থেকে তোলা। ছবি: আবদুস সালাম

গত কয়েক বছরে কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে অনেক জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে উল্লেখ করে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ার বলেন, এখন বস্তির মানুষও সচেতন। তিনি বলেন, তিনি সম্প্রতি রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে গবেষণা করে দেখেছেন, সেখানে ৮০ শতাংশ পরিবারে দুটি করে সন্তান আছে।

গোলটেবিল বৈঠকে ইউএনএফপিএ কর্মকর্তা আবু সাইদ হাসান, আইপাসের কান্ট্রি ম্যানেজার সাইদ রুবায়েত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান আমিনুল হক, পপুলেশন কাউন্সিলের অ্যাসোসিয়েট শরীফ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, অভিনয়শিল্পী পিয়া জান্নাত, যুব প্রতিনিধি তাসনিমা জারা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর মঈনুদ্দীন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।