১০ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই

ঝালকাঠি জেলা যুবদল অন্তর্কোন্দলে জর্জরিত হওয়ায় ১০ বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি। বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে না পারায় ২০১৩ সালে ঘোষিত ২ সদস্যবিশিষ্ট সভাপতি ও সম্পাদক দিয়েই চলছে দলীয় কর্মকাণ্ড।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে নতুন জেলা যুবদলের কমিটির শীর্ষ ৫ পদে পাল্টাপাল্টি নাম প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে কোন্দলের পাশাপাশি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছে যুবদল। তাই দলীয় কর্মসূচি পালনের পরিবর্তে এ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেতা-কর্মীরা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, জোট সরকারের আমলে মীর জিয়াউদ্দিন মিজান সভাপতি ও আবুল কালাম আজাদ সম্পাদক ছিলেন। সে সময় জেলা যুবদল শক্ত অবস্থানে ছিল। বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর সেই কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং মেহেদী হাসান খান ও রবিউল হোসেনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এ কমিটি ৫ বছরেও সম্মেলন করতে না পারায় ২০১৩ সালে জিএম আবদুস সবুর কামরুলকে সভাপতি ও শামিম তালুকদারকে সম্পাদক করা হয়। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা হয়নি। এ নিয়ে তৃণমূলের দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই দুই সদস্যের কমিটি তাদের সমর্থকদের নিয়ে জেলা বিএনপির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছে। এ অবস্থায় জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলামের নাম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রস্তাব পাঠিয়েছে জেলা বিএনপি। কেন্দ্রে পরিচিত মুখ হওয়ায় প্রস্তাবিত ওই কমিটিতে বর্তমান সভাপতি জিএম আবদুস সবুর কামরুলকে জেলা বিএনপি কাছে টেনে তাঁকে সভাপতি রেখে অপর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নতুন নাম কেন্দ্রে পাঠায়। কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাজাহান ওমর এ কমিটি পাসের বিষয়ে কেন্দ্রে লবিং করছেন। এই প্রস্তাবিত নামের বিরোধিতা করে যুবদলের তিনটি থানা কমিটি বর্তমান সম্পাদক শামিম তালুকদারকে সভাপতি ও আইনজীবী আনিসুর রহমানকে সম্পাদক করে কেন্দ্রে অনুরূপ শীর্ষ ৫ পদের নাম প্রস্তাব করে পাঠায়। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অধিকাংশ শামিম তালুকদার-সমর্থিত প্রস্তাবিত কমিটিকে সমর্থন করেন। এ নিয়ে দলাদলিতে লিপ্ত হয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে জেলা যুবদল। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলা বিএনপির নেতৃত্ব ও সাধারণ নেতা-কর্মীরা।

 এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শামিম তালুকদার বলেন, ‘তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা যে কমিটিকে সমর্থন করবেন, সেই কমিটি পাস হবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের তৃণমূলের চাওয়া-পাওয়া বুঝতে হবে। আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর আস্থাশীল। তাঁরা দ্রুত এই স্থবিরতার অবসান ঘটিয়ে সুন্দর একটি কমিটি উপহার দেবেন।’

এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি জিএম আবদুস সবুর কামরুল বলেন, ‘আমাদের কমিটি ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যেই আমরা কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিয়েছিলাম। তখন কেন্দ্রীয় নেতারা মামলা ও কারাবন্দীর শিকার হওয়ায় এ কমিটি অনুমোদন করা যায়নি।’ শীর্ষ ৫ পদের নাম পাল্টাপাল্টি কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে দাবি করেন। তবে শিগগিরই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিভিন্ন জটিলতার কারণে করা যায়নি। এর দায় কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি আমাদেরও আছে। তবে অচিরেই জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।’