মালয়েশিয়ায় রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট পেতে পারে, আশঙ্কা দূতাবাসের

পাসপোর্ট আবেদনকারীর ঠিকানা যাচাই করতে দেরি হলে মালয়েশিয়া থেকে ইস্যু করা বাংলাদেশের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) সে দেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের হাতে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন। কারণ, অতিজরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ঠিকানা যাচাই ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়ার যে নিয়ম রয়েছে, রোহিঙ্গারা তার সুযোগ নিতে পারেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ৯ আগস্ট ঢাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো এক চিঠিতে এই আশঙ্কার কথা বলা হয়।

মালয়েশিয়ায় অবৈধ হয়ে পড়া বিদেশি শ্রমিকদের বৈধতা দিতে ‘রি-হায়ারিং কর্মসূচি’ শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বাংলাদেশি যেসব শ্রমিক বৈধ প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ায় গিয়ে পরে অবৈধ হয়ে গেছেন, তাঁরা এই কর্মসূচির মাধ্যমে বৈধ হওয়ার সুযোগ নিতে পারবেন।

মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি সূত্র জানায়, রি-হায়ারিং কর্মসূচির জন্য প্রতিদিন শত শত বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছেন। এঁদের একটা অংশ সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় গেছে, যাঁদের অধিকাংশ বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজারের ঠিকানা ব্যবহার করছেন। অনেকে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া, রামু, মহেশখালী উপজেলার বাসিন্দা বলে দাবি করছেন।

মালয়েশিয়া হাইকমিশনের প্রথম সচিব (পাসপোর্ট ও ভিসা) মশিউর রহমান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, আবেদনকারীদের অনেকে বলছেন, তাঁদের হাতে লেখা পাসপোর্ট ছিল কিন্তু তা হারিয়ে গেছে। আবার কেউ বলছেন ছিনতাই হয়ে গেছে। কেউ কেউ ইচ্ছে করেই এত দিন আবেদন করেননি বলেও জানিয়েছেন। কারও ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাঁরা ভিসা নবায়ন করেননি।

হাইকমিশনের ধারণা, মালয়েশিয়ায় এমআরপি পাসপোর্টের জন্য যাঁরা আবেদন করছেন, তাঁদের একটি বড় অংশ রোহিঙ্গা। তবে তাঁরা রোহিঙ্গা কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে পুলিশের ঠিকানা বাছাইয়ের মাধ্যমে। কিন্তু ঠিক সময়ে আবেদনকারীর ঠিকানা যাচাই প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে না। এই প্রতিবেদন পেতে দেরি হলে যাচাই ছাড়াই পাসপোর্ট তৈরি হয়ে যাবে।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, সময়মতো আবেদনকারীর ঠিকানা যাচাই প্রতিবেদন না পেলে অধিদপ্তরের কিছুই করার থাকবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রাখাল চন্দ্র বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, কোনোভাবেই রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেওয়া হবে না। তবে ঠিকানা যাচাইয়ের সময় নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। এসব বিষয় কীভাবে সমাধান করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।