জামায়াত জোটে আছে, থাকবে: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,
জামায়াতে ইসলামী ১৮-দলীয় জোটে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আজ শুক্রবার বিকেলে নীলফামারী শহরের পৌর মার্কেটের দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
২০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ১৮-দলীয় জোট আছে। ২০ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত সমাবেশটি ছিল বিএনপির। এটা আমাদের দলের নিজস্ব। সে কারণে জামায়াত যায়নি। তারা ১৮-দলীয় জোটে আছে, থাকবে।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘নীলফামারীতে নির্বাচনের পরে আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অকুতোভয় দুজন কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও চারজন নেতা-কর্মী।’
বিএনপির নেতা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭১ সালে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকারের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আজ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যা শুরু করেছে এতে গণতন্ত্র নেই। তারা একনায়কতন্ত্র শুরু করেছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ভোটের নামে সরকারি সন্ত্রাস হয়েছে। র্যাব-পুলিশ-বিজিবি দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। শতকরা ৫ ভাগ ভোটও কোথাও হয় নাই। শতকরা ৯৫ জন মানুষ ভোট বর্জন করেছেন। তাঁরা এ প্রহসনের নির্বাচন মেনে নেননি।

বিএনপি নেতা আরও বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না, খালেদা জিয়ার এ দাবি প্রমাণিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিকভাবে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়।
গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপি অবৈধ সরকারের সঙ্গেও সংলাপে প্রস্তুত উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ বন্দুক আর পিস্তলের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায় কিন্তু পৃথিবীর কোনো দেশেই জোর করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, পারবে না। তিনি বলেন, সারা দেশে বিরোধী জোটের নেতা-কর্মীদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হচ্ছে। সারা দেশে ২৯৪ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকতে চায়, মন্তব্য করে তিনি বলেন, একদলীয় স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলন চলতে থাকবে। অবিলম্বে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সামসুজ্জামান। এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সহসভাপতি ফরহাদ হোসেন আজাদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি কামাল আনোয়ার আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইউনুস আলী, সাবেক ছাত্রনেতা তৈবুর হোসেন, ছাদেকুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা। সভায় নীলফামারী জেলার নেতারা ছাড়াও ছয় উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যার পর মির্জা ফখরুল সড়কপথে তাঁর নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা হন।

আরও জানতে পড়ুন