দুই নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ঠাকুরগাঁওয়ের পাঁচ বছরের শিশু নাদিরা বেগমকে হত্যার দায়ে দুই নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হায়দার আলী আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত নারীরা হলেন পীরগঞ্জ উপজেলার চাঁদগাঁও গ্রামের মাজেদা খাতুন (৪৫) ও একই গ্রামের মোছা. তাহমিনা (৪২)। রায় ঘোষণার সময় তাঁরা আদালতে ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বসতভিটার পাঁচ শতক জমি নিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলার চাঁদগাঁও গ্রামের মহসিন আলীর সঙ্গে প্রতিবেশী মাজেদা খাতুন ও তাহমিনার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে মহসিন আলীকে ফাঁসাতে গত ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল প্রতিবেশী আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে নাদিরা বেগমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মাজেদা খাতুন ও তাহমিনা। পরে তাঁরা নাদিরার লাশ গ্রামের একটি ভুট্টাখেতে ফেলে রাখেন। এরপর প্রচার করতে থাকেন মহসিন নাদিরাকে হত্যা করেছেন।

ওই দিন নাদিরার বাবা আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে মহসিন আলীকে আসামি করে পীরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তবে সন্দেহ হওয়ায় পরদিন ১৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াহেদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাজেদাকে পুলিশ হেফাজতে নেন। এ সময় শিশু নাদিরাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন মাজেদা। পরের দিন মাজেদা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে গত ২০১৪ সালের ১২ জুন মাজেদা ও তাহমিনাকে অভিযুক্ত করে মো. ওয়াহেদ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। মামলায় মহসিনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবদুল হামিদ জানান, সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মাজেদা খাতুন ও তাহমিনা দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মকবুল হোসেন বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।