প্রেমিকের বিয়ের খবরে ছাত্রীর 'আত্মহত্যা'!

আত্মহত্যা
আত্মহত্যা

নেত্রকোনায় রুমা আক্তার (১৭) নামের এক কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, লাশ উদ্ধারের সময় ওই ছাত্রীর রেখে যাওয়া একটি চিরকুট, দিনপঞ্জি এবং তার প্রেমিকের দুই কপি ছবি জব্দ করেছে।

রুমা সদর উপজেলার বালুয়াকান্দা গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে। সে নেত্রকোনা সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ মানবিক শাখার ছাত্রী ছিল। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ওই ছাত্রীর বাড়ির সামনের পুকুরপাড়ের একটি আমগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে নেত্রকোনা মডেল থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন বছর ধরে রুমা আক্তারের সঙ্গে পাশের গ্রাম সাতবুড়িকান্দার মঞ্জিল মিয়ার ছেলে সোহান মিয়ার (১৯) প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। সোহান নেত্রকোনা সরকারি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। সম্প্রতি উভয় পরিবারের মধ্যে তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর থেকে সোহানের পরিবার বিভিন্ন সময়ে রুমার পরিবারকে দোষারোপ করে আসছিল। মাস খানেক আগে একদিন রাতের বেলায় সোহানের বাবা মঞ্জিল মিয়াসহ পরিবারের বেশ কয়েকজন রুমাদের বাড়িতে এসে রুমাসহ তার পরিবারের সবাইকে অপমান করে শাসিয়ে যান। একপর্যায়ে সোহানের পরিবার সোহানের বিয়ে ঠিক করে। সোহান প্রথমে এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না। পরে পরিবারের চাপে তিনি ওই বিয়ে মেনে নিতে বাধ্য হন। আজ শুক্রবার সোহানের বিয়ের কথা ছিল। রুমার পরিবারের লোকজনের ধারণা, এ খবর পেয়ে রুমা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। আজ ভোরে বাড়ির সামনে পুকুরপাড়ে একটি আমগাছের সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় রুমাকে দেখতে পান পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। এ সময় ওই গাছের নিচে প্রেমিক সোহানকে উদ্দেশ করে লিখে যাওয়া রুমার একটি চিরকুট, সোহানের দুই কপি ছবি এবং একটি দিনপঞ্জি (ডায়েরি) পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে সকাল ১০টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে। দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নেত্রকোনা সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা লিটন মিয়া বাদী হয়ে সোহানকে আসামি করে নেত্রকোনা মডেল থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনায় দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন।

এদিকে সোহান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য জানতে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি। ঘর তালাবদ্ধ দেখা যায়। পাশের বাড়ির লোকজন প্রথম আলোকে জানান, রুমার আত্মহত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর সোহান ও তাঁর পরিবারের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। পুলিশ এসেও খুঁজে গেছে।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ছানোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, মেয়েটির রেখে যাওয়া চিরকুট ও বিভিন্ন আলামত থেকে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, সোহানের সঙ্গে প্রেমঘটিত সম্পর্কের কারণেই এ ঘটনা ঘটতে পারে। এ নিয়ে থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে।