আবাহনী মাঠ মিলেছে, সরকার অনুমোদন দিলেই উৎসব

সংগীতপ্রেমী মানুষের প্রত্যাশা ও ভালোবাসার জয় হয়েছে। শাস্ত্রীয় সংগীত উৎসবের জন্য শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেছে মাঠ। ১২ নভেম্বর উৎসবের ভেন্যু হিসেবে আবাহনী মাঠের জন্য আবেদন করলে গত পরশু বেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে মাঠ বরাদ্দের চিঠি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এবার সরকারের অনুমোদন মিললেই ডিসেম্বরের ২৬ তারিখ থেকে শুরু হবে বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের ষষ্ঠ আসর।

আবাহনী লিমিটেডের চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে ২৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত উৎসব চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অনুমতি নেওয়া, আবাসিক এলাকা ও হাসপাতালগুলোতে শব্দ না পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা এবং উৎসবের প্রস্তুতি ও চলাকালীন আবাহনী দলের খেলোয়াড়দের অন্যত্র অনুশীলনের খরচ বহন করার শর্ত দেওয়া হয়েছে।

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এখনো সরকারের অনুমতি পাইনি, কেবল মাঠ বরাদ্দ পেয়েছি। সরকারের অনুমতি পেলেই উৎসব হবে। আশা করি অনুমতি পাব, না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। এই সরকার সংস্কৃতিবান্ধব সরকার। আশা করি তাঁরাও অনুধাবন করেছেন যে উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবটা সারা দেশের শিক্ষিত তরুণেরা চায়। সুতরাং আমি মনে করি সরকারও চাইবে এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে।’

সরকারের অন্যান্য পক্ষের অনুমতি প্রসঙ্গে আবুল খায়ের বলেন, ‘সংস্কৃতিমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। আশা করি তিনি আমাদের অনুমোদন দেবেন। অর্থমন্ত্রী অনেক দিন ধরেই আমাদের সঙ্গে আছেন, আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা গত পাঁচ বছর ধরে আর্মি স্টেডিয়ামে এই উৎসব করে আসছি। আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁদের সহযোগিতা না পেলে এত উঁচু মাপের একটি উৎসব করতে পারতাম না। এবার যে কারণেই হোক, তাঁরা মাঠ দিতে পারেননি। আগামী বছর হয়তো দেবেন, আবার না-ও দিতে পারেন। কিন্তু আবাহনী এবার আমাদের বাঁচিয়েছে। আবাহনী এ সময় যদি জায়গা না দিত, তাহলে আমরা উৎসবটি হারাতাম, ষষ্ঠ আসরটি করতে পারতাম না। একটি উৎসবের ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে সেটি চালিয়ে নেওয়া কঠিন। আবাহনীর কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ। তা ছাড়া খেলোয়াড়েরা মাঠ প্রস্তুত ও উৎসবের ১২ দিন অন্যত্র অনুশীলন করবে, সেই খরচ আমরা বহন করছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইতিবাচক খবর জানা যাবে।’

উৎসব ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ব্লুজ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদুল ইসলাম জানান, শব্দ নিয়ন্ত্রণের একটি বিশেষ সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করেছেন তাঁরা। এটা ব্যবহার করলে মাঠের বাইরে উৎসবের শব্দ ছড়াবে না। বিনা নিবন্ধনে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মাঠের চারপাশে ১৬ ফুট উচ্চতায় ঘের থাকবে, থাকবে র‍্যাব, পুলিশ ও এইজেসের তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা।

মাঠের দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১২ থেকে ১৪ হাজার দর্শক এ মাঠে বসে উৎসব উপভোগ করতে পারবেন। আশা করা যাচ্ছে, আগের পরিকল্পনা মতো প্রায় ৭০ শতাংশ শিল্পী এ আসরে যোগ দেবেন।’

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের ভেন্যু হিসেবে আবাহনী মাঠকে প্রস্তুতের জন্য ইতিমধ্যে নকশা পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা। তিনি জানান, তাঁদের ডি অ্যান্ড বি সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে সহজেই শব্দ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। শব্দের আওতা ঠিক করে দিলে সেটি মাঠের বাইরে যাবে না।