এও কি সম্ভব!

মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নিচে আনন্দবাজারে তৈরি করা হয়েছে আবর্জনা রাখার সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)। কিন্তু সেই এসটিএসে মোটরসাইকেল পার্ক করা হচ্ছে। রাখা হচ্ছে ঘোড়া ও গরু। বসেছে চায়ের দোকানও। আর আবর্জনা পড়ে আছে রাস্তায় l ছবি: হাসান রাজা
মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নিচে আনন্দবাজারে তৈরি করা হয়েছে আবর্জনা রাখার সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)। কিন্তু সেই এসটিএসে মোটরসাইকেল পার্ক করা হচ্ছে। রাখা হচ্ছে ঘোড়া ও গরু। বসেছে চায়ের দোকানও। আর আবর্জনা পড়ে আছে রাস্তায় l ছবি: হাসান রাজা

পুরান ঢাকার আনন্দবাজারে একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ভবন বা সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু আবর্জনা রাখা হচ্ছে এসটিএসের বাইরে রাস্তায়। আর এসটিএসের ভেতরে পার্ক করা হচ্ছে মোটরসাইকেল। রাখা হচ্ছে ঘোড়া, গরু।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা এবং রাস্তায় বিদ্যমান ময়লার কনটেইনারগুলো এক জায়গায় রাখতে প্রায় দেড় মাস আগে আনন্দবাজারে এই এসটিএস নির্মাণকাজ শেষ হয়। কিন্তু রাস্তা থেকে ডাস্টবিন ও কনটেইনারগুলো এসটিএসে স্থানান্তর করা হয়নি। ফলে আনন্দবাজারের বর্জ্য রাস্তাতেই ফেলা হচ্ছে। কবে নাগাদ তা স্থানান্তর করা হবে, তা তাঁরা জানেন না।

তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বলছে, এই এসটিএসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়নি। তাই কনটেইনারগুলোও সেখানে ঢোকানো হয়নি। মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের বিষয়টি তাদের জানা নেই।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, আনন্দবাজারে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসড়কের নিচে এই এসটিএস নির্মাণ করা হয়েছে। এসটিএসের ফটক ঘেঁষে রাস্তায় আবর্জনা স্তূপ হয়ে আছে। আবর্জনার পচা পানি রাস্তা গড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু ভেতরে বর্জ্য বা বর্জ্য রাখার কনটেইনার নেই। সেখানে প্রায় ১৫টি মোটরসাইকেল পার্ক করা। এর একাংশে দুটি গরু ও একটি ঘোড়াও বেঁধে রাখা আছে। পাহারাদার হিসেবে কাজ করছেন তরফ আলী নামে এক ব্যক্তি। তিনি এসটিএসের ভেতর চায়ের দোকান দিয়ে বসেছেন।

তরফ আলী বলেন, আনন্দবাজার, বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীরাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে মোটরসাইকেল রাখেন। এগুলো পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি চায়ের দোকানও চালান।

এই এসটিএসের পশ্চিম পাশে (৩০ মিটার) রাস্তায় বর্জ্যের চিত্র আরও ভয়াবহ। এখানে একটি কনটেইনারে আনন্দবাজারের বর্জ্য ফেলছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু কনটেইনারের চারপাশে বর্জ্য ছড়িয়ে আছে। ময়লা পানিতে রাস্তাও সয়লাব। দুর্গন্ধে নাক-মুখ চেপে চলাচল করছেন পথচারীরা।

এ ছাড়া এই এলাকায় উড়ালসড়কের নিচে আছে ঘোড়ার আস্তাবল। এসব ঘোড়ার বর্জ্য থেকেও বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

আনন্দবাজারের বাসিন্দা লিয়াকত হোসেন বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে আনন্দবাজারের বর্জ্য রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্যই এসটিএস নির্মাণ করে ডিএসসিসি। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার প্রায় দেড় মাসেও ডাস্টবিন ও কনটেইনারগুলো এসটিএসে ঢোকানো হয়নি। এতে মহল্লার মানুষসহ পথচারীদের সেই দুর্ভোগ রয়েই গেছে। অবিলম্বে এসটিএসটি চালু করতে হবে। প্রায় একই কথা বলেছেন আনন্দবাজারের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম।

জানতে চাইলে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এক সপ্তাহ আগে এটিসহ চারটি এসটিএস উদ্বোধন করার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে গেছে। ১৬ ডিসেম্বরের পরপরই সেগুলো উদ্বোধন করা হবে। এরপর কোনো কনটেইনার রাস্তায় থাকবে না।