কাজ শুরু হয়নি, ভোগান্তিতে তিন লাখ মানুষ

হোমনার দুলালপুর-রামকৃষ্ণপুর-রামচন্দ্রপুর সড়কের বেশির ভাগ স্থানই ভাঙা। ছবিটি সম্প্রতি রামকৃষ্ণপুর এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো
হোমনার দুলালপুর-রামকৃষ্ণপুর-রামচন্দ্রপুর সড়কের বেশির ভাগ স্থানই ভাঙা। ছবিটি সম্প্রতি রামকৃষ্ণপুর এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার দুলালপুর-রামকৃষ্ণপুর-রামচন্দ্রপুর সড়ক সংস্কার চুক্তির পর সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী অন্তত তিন লাখ মানুষ। অথচ চুক্তির নয় মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা।

সরেজমিনে গত ২৭ নভেম্বর সড়কটিতে দেখা যায়, দুলালপুর সেতু থেকেই সড়কটি ভাঙা শুরু হয়েছে। রাস্তার পিচ ও ম্যাকাডম উঠে ১০-১২ মিটার পরপরই বড় বড় গর্ত হয়েছে। দৌলতপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া সড়কটির দুই কিলোমিটার অংশেরই এ হাল। রামকৃষ্ণপুর বাজার থেকে পূর্ব দিকে শোভারামপুর পর্যন্ত রাস্তার পুরোটারই পিচ উঠে গেছে। এ রাস্তার অটোচালক সোহেল রানা বলেন, ‘ভাই রাস্তা দিয়া মানুষ নিতে আমাদের জানে আর মানছে না। রাস্তা ভাঙার কারণে গাড়ির যেমন ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি শরীরেরও।’

হোমনা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলার দুলালপুর থেকে রামকৃষ্ণপুর হয়ে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকা পর্যন্ত নয় কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নসহ মুরাদনগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষ রাজধানী ঢাকা, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। সড়কটিতে প্রতিদিন চার-পাঁচ শ পিকআপ, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা, ইজিবাইক চলাচল করে। দুটি প্রকল্পে সড়কটির সংস্কার কাজ পায় বরিশাল এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএ ট্রেডিং কনস্ট্রাকশন। গত ১২ এপ্রিল কুমিল্লা এলজিইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ৪ কোটি ২৭ লাখ ৯ হাজার ৪৭৫ টাকা ব্যয়ে ওই দুই প্রকল্পের কাজ করার চুক্তি হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির।

হোমনা উপজেলা প্রকৌশলী জহিরুল হক বলেন, ‘ঠিকাদারের গাফিলতিতে রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে না। কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারকে ৭-৮টি চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ঠিকাদার কাজ শুরু করছেন না।’

কুমিল্লা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাব আলী বলেন, চুক্তির সাত মাস পেরিয়ে গেলেও সংস্কার কাজ শুরু না করায় ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল এবং তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী এ জেড এম এখলাস উদ্দিনের মুঠোফোনে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাঁর মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। তা–ও কোনো জবাব মেলেনি।