শিক্ষেকর অধিকাংশ পদ খালি, পাঠদান ব্যাহত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া সরকারি কলেজে শিক্ষক ও কর্মচারীদের ৪৩টি পদের ২৫টিই খালি৷ এর মধ্যে চারটি বিভাগে কোনো শিক্ষকই নেই৷ পদগুলো শূন্য থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে৷
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে চিওড়া এলাকার কাজী জহিরুল কাইয়ুম সাত একর ৯২ শতক জায়গা নিয়ে চিওড়া সরকারি কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ ১৯৮৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কলেজটিকে জাতীয়করণ করা হয়৷ কলেজে অধ্যক্ষসহ শিক্ষকের পদের সংখ্যা ২৪টি৷ এর মধ্যে ১৩টি খালি৷ বাংলা বিভাগে প্রভাষকের তিনটি পদের মধ্যে ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে একটি খালি৷
ইংরেজি বিভাগে একমাত্র প্রভাষকের পদটি গত বছরের ২০ অক্টোবর থেকে খালি৷ অর্থনীতি বিভাগে একজন সহকারী অধ্যাপক ও তিনজন প্রভাষকের মধ্যে একটি পদ খালি৷ ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রভাষকের তিনটি পদের মধ্যে দুটি, হিসাববিজ্ঞান বিভাগে দুটি পদের মধ্যে দুটি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষকের দুটি পদের দুটি, ইসলামের ইতিহাসের দুটি পদের মধ্যে দুটি পদই শূন্য৷
কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থী কাজী ইফতেদা সুলতানা বলেন, কলেজে ইংরেজির কোনো শিক্ষক নেই৷ বাংলা শিক্ষক মাঝেমধ্যে ক্লাস নেন৷ মেয়েদের কোনো কমনরুম নেই৷ কম্পিউটার ল্যাবরেটরিও নেই৷ প্রথম বর্ষের বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র মো. আসিফুর রহমান বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে সরকারি এই কলেজটিতে ভর্তি হয়েছিলাম, কিন্তু শিক্ষকের অভাবে আমরা এখন ক্লাস করতে পারি না৷’
কলেজের অফিস সহকারী জাফর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘এ কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে একাদশ শ্রেণীতে ২৯৬ জন, দ্বাদশ শ্রেণীতে ৩৪৭ জন এবং ডিগ্রি (পাস) কোর্সে ১১০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন৷ কর্মচারীদের ১৯টি পদের মধ্যে ১২টিই খালি৷ জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কনক বড়ুয়া বলেন, ডরমিটরি থাকলে এখানকার শিক্ষকেরা হয়তো বদলির চেষ্টা করতেন না৷ তাই সবার আগে এখানে শিক্ষকদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে৷
কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আশরাফ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকের অভাবে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে৷ বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে৷ ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক না থাকায় সপ্তাহে এক দিন করে অতিথি শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে৷ তিনি আরও বলেন, কলেজের পশ্চিম পাশের দ্বিতল পরিত্যক্ত ভবনটিতে নতুন একাডেমিক ভবন, শিক্ষকদের জন্য ডরমিটরি এবং শিক্ষকদের আরও পদ সৃষ্টি করে সরকারি এই কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু করলে গ্রামের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা লাভে সমর্থ হবে৷
কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক নিজামুল করিম বলেন, চিওড়া সরকারি কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীর শূন্য পদ পূরণ করা অত্যন্ত জরুরি৷ তবে আবাসিক সমস্যার কারণে এখান থেকে শিক্ষকেরা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন ৷ এতে সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে৷