ইয়াবাতেও ভেজাল!

ইয়াবা বড়িও ভেজাল হচ্ছে। সিআইডি চট্টগ্রাম ফরেনসিক ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষায় ভেজাল ইয়াবা ধরা পড়েছে। এসব ইয়াবা সেবন করলে মানুষের শরীরে নানা রোগ দেখা দিতে পারে বলে রাসায়নিক পরীক্ষকেরা জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফেনী মডেল থানা পুলিশ ২৫টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করে গত ১০ সেপ্টেম্বর। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। আলামত পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়ে ওই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম ফেনী বিচারিক হাকিম আদালতে আবেদন করেন। আদালত সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের ফরেনসিক ল্যাবকে উদ্ধার হওয়া বড়ির মধ্যে ইয়াবার উপাদান আছে কিনা তা পরীক্ষার অনুমতি দেন। ২২ সেপ্টেম্বর আলামত পাওয়ার আট দিন পর সিআইডি প্রতিবেদন দেয়। সিআইডি চট্টগ্রাম ফরেনসিক ল্যাবের সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষক পিংকু পোদ্দারের সই করা প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, ‘ফেনী মডেল থানার মামলায় ইয়াবার উপাদান “অ্যামফেটামিন” পাওয়া যায়নি।’
শুধু ফেনীর ওই মামলায় নয়, গত তিন মাসে ইয়াবা উদ্ধারের ১০টি মামলায় আলামত পরীক্ষায় অ্যামফেটামিন পাওয়া যায়নি। অথচ প্রতি মাসে গড়ে ১৩০টি মামলার আলামতে অ্যামফেটামিন পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদন দিচ্ছে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব। ভেজাল এসব ইয়াবা দেখতে অনেকটাই ইয়াবার মতো। বাইরে লাল রঙের আবরণ থাকলেও ভেতরের অংশ সাদা।
সিআইডি চট্টগ্রাম ফরেনসিক ল্যাবের সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষক পিংকু পোদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতি মাসে গড়ে ১৩০টি মামলার আলামতে ইয়াবার উপাদান পাওয়া গেছে। তবে গত তিন মাসের ১০টি আলামতে ইয়াবার উপাদান পাওয়া যায়নি। ভেজাল এসব ইয়াবা সেবনে মানুষের কিডনিতে সমস্যা, যকৃতে প্রদাহ, ক্ষুধামান্দ্য, মেজাজ খিটখিটেসহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।’
র্যাব ও পুলিশ সূত্র জানায়, মিয়ানমার সীমান্ত হয়ে কক্সবাজার টেকনাফ থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ইয়াবা। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে অনেকেই আসক্ত হয়ে পড়ে ইয়াবার প্রতি। এসব বড়ি সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় নগরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে গোপনে বিক্রি হয়। আর চাহিদা থাকায় একশ্রেণীর প্রতারক ভেজাল ইয়াবা বড়ি তৈরি করে বিক্রি করছে। ভেজাল ইয়াবা বড়িগুলো দেখতে ইয়াবা বড়ির মতো। তবে কেনার পর সেবনকারীরা বুঝতে পারেন এটি ভেজাল। সাধারণ ইয়াবা বড়ি হেরোইনের মতো পুড়িয়ে ধোয়া নেন সেবনকারীরা।
পিংকু পোদ্দার বলেন,‘আসল ইয়াবাতে একটি মিষ্টি গন্ধ পাওয়া যায়। আর নকল ইয়াবাতে প্লাস্টিক পোড়ানোর গন্ধ মেলে। টেক্সটাইলে ব্যবহূত রং দিয়ে নকল ইয়াবার বহিরাবরণ তৈরি করা হয়। সাধারণ ইথিলিন ভ্যানিলা দিয়ে আসল ইয়াবা তৈরি হওয়ায় তাতে মিষ্টি একটি গন্ধ থাকে।’ এ ছাড়াও তিনি জানান, মারকুইজ রিয়েজেন্ট দিয়ে পরীক্ষা করলেও ভেজাল ও আসল ইয়াবার তফাত্ ধরা পড়ে। আসল ইয়াবাতে লোহায় মরিচা পড়ার রং আসবে, আর নকল ইয়াবাতে কোনো রং আসবে না।