মাদ্রাসাশিক্ষকদের আমরণ অনশন, ২২ জন অসুস্থ

অনশনে অসুস্থ এক নারী শিক্ষক। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে l ছবি: সাইফুল ইসলাম
অনশনে অসুস্থ এক নারী শিক্ষক। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে l ছবি: সাইফুল ইসলাম

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নিবন্ধন পাওয়া সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন ওই সব মাদ্রাসার শিক্ষকেরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে টানা অবস্থান কর্মসূচির নবম দিনের মাথায় তাঁরা অনশন শুরু করেন। বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

তীব্র শীতের মধ্যে টানা অবস্থান কর্মসূচির পর অনশন শুরুর প্রথম দিনে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২২ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া পাঁচজনের নাম পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন আসমা বেগম (৫৮), শামসুল আলম (৪৭), আলামিন (৪০), এনামুল (৫২) ও রুহুল আমিন (৩৫)।

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন চৌধুরী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় তাঁরা এমন কঠোর কর্মসূচি শুরু করেছেন। এখন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দাবি পূরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।

অনশনস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাত ও রাস্তার একাংশে শিক্ষকেরা শুয়ে-বসে অনশন করছেন। তীব্র শীত থাকায় শিক্ষকদের কষ্ট আরও বেড়েছে। শিক্ষকেরা বলছেন, যতই কষ্ট হোক, এবার দাবি পূরণ ছাড়া বাড়ি যাবেন না।

নিবন্ধনকৃত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে জাতীয়করণের দাবিতে ১ জানুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন তাঁরা। গতকাল তা অনশনে রূপ নিল।

সারা দেশে মাদ্রাসা বোর্ড থেকে নিবন্ধিত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ১৮ হাজার ১৯৪টি হলেও চালু আছে ১০ হাজারের মতো। এসব মাদ্রাসায় শিক্ষক আছেন প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১ হাজার ৫১৯টি মাদ্রাসার ৬ হাজার ৬৭৬ জন শিক্ষক সরকার থেকে কিছু ভাতা পান। প্রধান শিক্ষকেরা মাসে আড়াই হাজার এবং সহকারী শিক্ষকেরা ২ হাজার ৩০০ টাকা পান। অন্যরা সরকার থেকে কোনো বেতন-ভাতা পান না।