যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর চুল কর্তন

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় মাদক ব্যবসার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে না দেওয়ায় ঘুমন্ত স্ত্রীকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টা করেছেন এক স্বামী। হত্যা করতে ব্যর্থ হয়ে কাঁচি দিয়ে স্ত্রীর চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই স্বামীর বিরুদ্ধে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বগুড়ার নন্দীগ্রাম থানা-পুলিশের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের চাপিলাপাড়া গ্রামের গৃহবধূ মাহমুদা বেগম (২৩)। ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন অভিযুক্ত স্বামী উকিল উদ্দিন (২৫)।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নন্দীগ্রাম থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক বলেন, উকিল উদ্দিনকে আটকের চেষ্টা চলছে। তবে তিনি মাদক ব্যবসায়ী কি না, পুলিশের জানা নেই। পুলিশ ও স্থানীয় তিন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয় বছর আগে নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের গোছন গ্রামের দিনমজুর ইয়াদুল ইসলামের মেয়ে মাহমুদাকে বিয়ে করেন পাশের চাপিলাপাড়া গ্রামের উকিল উদ্দিন। এ দম্পতির ঘরে চার বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

ইয়াদুল ইসলাম বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে উকিল উদ্দিন তাঁর মেয়েকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরপরই ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন। ধারদেনা করে যৌতুকের দাবি মেটান তিনি। নতুন করে আরও ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে মেয়ের ওপর এক বছর ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন। সর্বশেষ কয়েক দিন আগে যৌতুকের টাকা নিতে মেয়েকে তাঁর বাড়িতে পাঠান। তিনি শ্রমিক মানুষ। শীতের কারণে কয়েক দিন ধরে কাজ করতে পারছেন না। মেয়ের অসুস্থতার কথা শুনে চিকিৎসার জন্য এক হাজার টাকা হাতে দিয়ে স্বামীর বাড়ি পাঠান।

মাহমুদা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, উকিল উদ্দিন একসময় দিনমজুরি করতেন। এখন মাদক ব্যবসায় জড়িয়েছেন। গত বুধবার বাবার বাড়ি থেকে ফেরার পর উকিল উদ্দিন টাকা চান। বাবা টাকা দিতে পারেননি জানালে সন্ধ্যা থেকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে চিকিৎসার জন্য বাবার দেওয়া এক হাজার টাকাও দাবি করেন। সেই টাকা না দেওয়ায় কয়েক দফা মারধর করেন। একসময় কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। রাত ১২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁকে বালিশচাপা দিয়ে মারার চেষ্টা করেন উকিল উদ্দিন। চিৎকার দিলে ক্ষুব্ধ হয়ে কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কেটে দেন। এরপর রাতভর নির্যাতনের পর সকালে বাবার বাড়িতে খবর পাঠালে বাবা-মা তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।