মালয়েশিয়ায় যাচ্ছে ভোলার সুগন্ধি ধান

সুগন্ধি ধান কাটছেন চাষিরা। সাম্প্রতিক ছবি l প্রথম আলো
সুগন্ধি ধান কাটছেন চাষিরা। সাম্প্রতিক ছবি l প্রথম আলো

ভোলায় সুগন্ধি চিকন ব্রি-৩৪ ধানের আবাদ করে কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছেন। কৃষকদের কাছ থেকে একটি সংস্থা এ ধান বেশি দামে কিনে মালয়েশিয়ায় পাঠাচ্ছে।

কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় এই ধান চাষে দিন দিন তাঁদের আগ্রহ বাড়ছে। এ ছাড়া ভোলার সুগন্ধি চিকন ধান সাতক্ষীরার হালিমা অটো রাইস মিলের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হচ্ছে। তাই বাণিজ্যিকভাবে এ ধানের চাষ করা হচ্ছে।

ভোলা সদর, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, লালমোহন ও চরফ্যাশন উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৯০০ একর জমিতে সুগন্ধি ব্রি-৩৪ ধান চাষ করেছেন ৮ হাজার কৃষক। এসব কৃষক আগে স্থানীয় কালোজিরাসহ নানা জাতের ধান আবাদ করতেন। কিন্তু এতে লোকসান গুনতে হতো। তাই এবার সুগন্ধি ব্রি-৩৪ ধানের আবাদ করেন। প্রথমে তাঁদের মধ্যে তেমন আগ্রহ না থাকলেও ফলন ওঠার পর ভালো দাম পেয়ে কৃষকেরা আনন্দিত।

চর ভেদুরিয়ার কৃষক লোকমান শেখ বলেন, ঘরে বসেই তাঁরা পাইকারদের কাছে ধান বিক্রি করছেন ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে। কম খরচে অধিক লাভ আর রোগবালাই না থাকায় এ ধানের প্রতি তাঁদের আগ্রহ বাড়ছে।

ভোলা গ্রামীণ জনউন্নয়ন সংস্থার (জিজেইউএস) নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) অর্থায়নে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন ও জিজেইউসের সহযোগিতায় ভোলা জেলার ৮ হাজার কৃষককে এ ধানের বীজ ও পরামর্শ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে এ সুগন্ধি ধান ভোলা থেকে কিনে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে।

সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের প্রান্তিক চাষি আবদুল মালেক বিশ্বাস, দৌলতখানের মো. জসিম, বোরহানউদ্দিনের মো. হানিফ ও লালমোহন উপজেলার বদরপুরের মো. সেন্টু বলেন, তাঁরা এ বছর আবাদের ৮০ শতাংশ জমিতে ব্রি-৩৪ জাতের ধান চাষ করেছেন। ফলন ও দাম ভালো পেয়েছেন। এতে তাঁরা খুশি।

কৃষক মো. মিজান, শরিফ ও মো. হান্নান বলেন, আগে তাঁরা শখের বসে চিকন ধানের চাষ করতেন। এখন লাভের আশায় আবাদ শুরু করেছেন। তাঁরা তিন বছর আগে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় সুগন্ধি ব্রি-৩৪ ধানের বিনা মূল্যের বীজ পেয়ে আবাদ শুরু করে একরপ্রতি ৪০ থেকে ৪২ মণ ধান পেয়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, সুগন্ধি ব্রি-৩৪ জাতের ধানের আবাদ পরিবেশসম্মত এবং অপেক্ষাকৃত কম উর্বর জমিতে ফলে। উৎপাদন খরচ অনেক কম। এ কারণে এ জাতীয় ধান চাষে কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে।