শিশু পরিবারের ভেতরে চলাচলের রাস্তা

চাঁদপুর শহরের বাবুরহাটে সরকারি শিশু পরিবারের মধ্য দিয়ে করা বাড়ির পথ l ছবি: প্রথম আলো
চাঁদপুর শহরের বাবুরহাটে সরকারি শিশু পরিবারের মধ্য দিয়ে করা বাড়ির পথ l ছবি: প্রথম আলো

চাঁদপুর সরকারি শিশু পরিবারের সীমানাপ্রাচীরের ভেতর দিয়ে স্থানীয় একটি বাড়ির কয়েকটি পরিবার চলাচলের রাস্তা করে নিয়েছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এখানে থাকা ১৬৫টি এতিম কন্যাশিশু। ওই পথ দিয়ে প্রবেশ করে প্রায়ই এখানে বখাটেরা আড্ডা দেয়। এতে মেয়েরা সব সময় আতঙ্কে থাকে। 

শিশু পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শিশু পরিবারের শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে বিষয়টি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। এ ছাড়া পথটি বন্ধ করতে সীমানাপ্রাচীর দেওয়ার কথা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।’
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রজত শুভ্র সরকার বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছি। তাদের সহযোগিতা পেলে পথটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক আবদুস সবুর মণ্ডল বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠান এভাবে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে পারে না। আবার অন্যদের চলাচলের বিষয়টিও চিন্তা করতে হবে। এ জন্য একটি সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন। আমি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পৌর মেয়র, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও জেলা পুলিশ প্রশাসনকে নিয়ে বসে অচিরেই এর সমাধান করব।’
চাঁদপুর সরকারি শিশু পরিবারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৩ একর জমির ওপর ব্রিটিশ আমলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সরকারি শিশুসদন নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীকালে এখান থেকে ছেলেদের পাশের লক্ষ্মীপুর জেলায় সরিয়ে নিয়ে এটিকে শুধু মেয়েদের জন্য করা হয়। ২০০৫ সালে শিশুসদনের নাম পরিবর্তন করে নাম দেওয়া হয় শিশু পরিবার। কিন্তু এই শিশু পরিবারের উত্তর-পশ্চিমে থাকা মালিবাড়ির কয়েকটি পরিবার প্রতিষ্ঠানের সীমানাপ্রাচীরের ভেতরের মাঠ দিয়ে চলাচলের পথ বানিয়ে নিয়েছে। ওই পথটি এখনো ব্যবহার করছে তারা। এই সুযোগে প্রায়ই এলাকার বখাটেরা এসে মাঠে ঘোরাঘুরিসহ আড্ডা দেয়। এ অবস্থায় শিশু পরিবার ও সেখানে থাকা মেয়েরা অরক্ষিত ও নিরাপত্তাহীনতায় থাকছে।
মালিবাড়ির বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক জয়ন্ত দাস বলেন, ‘আমরা বাপ-দাদার আমল থেকে এই পথ দিয়ে চলাচল করে আসছি। এটি ছাড়া আমাদের ১০-১২টি পরিবারের চলাচলের কোনো ব্যবস্থা নেই। আমাদের চলার পথ তৈরি করে দিলে এই পথ আমরা আর ব্যবহার করব না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিশু পরিবারের একাধিক কিশোরী জানায়, এই শিশু পরিবারের মাঠ দিয়ে লোকজনের চলাচলের রাস্তা থাকায় প্রায়ই বাইরের ছেলেরা এসে আড্ডা দেয়। এতে তারা ভয়ে থাকে।
শিশু পরিবারের মেট্রন কাম নার্স আনোয়ারা হক বলেন, প্রতিষ্ঠানের ভেতর দিয়ে লোকজন আসা-যাওয়া করে।
শিশু পরিবারের শিক্ষক আবদুল লতিফ বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কোনো লাভ হয়নি। পুলিশ সম্প্রতি পথটি বন্ধ করার চেষ্টা করেও পারেনি।’