নারায়ণগঞ্জে পুলিশের কড়াকড়িতে ফুটপাত মুক্ত

নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে গতকাল হকার বসেনি। পথচারীরা ফুটপাতে স্বস্তিতে হাঁটেন l ছবি:দিনার মাহমুদ
নারায়ণগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে গতকাল হকার বসেনি। পথচারীরা ফুটপাতে স্বস্তিতে হাঁটেন l ছবি:দিনার মাহমুদ

পুলিশের কড়াকড়িতে নারায়ণগঞ্জ নগরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে গতকাল শুক্রবার হকার বসেননি। মুক্ত ফুটপাতে স্বস্তিতে চলাচল করেছে নগরবাসী। এদিকে বিকল্প চারটি সড়কের ফুটপাতে হকার বসার সাময়িক অনুমতি দেওয়া হলেও হকার দেখা যায়নি। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাঢ়া, মুক্তি জেনারেল হাসপাতাল কালীরবাজার মোড়, ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকার ফুটপাতে দুপুরের পর কিছু হকার বসার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। পুরো বঙ্গবন্ধু সড়কজুড়ে পুলিশের টহল ছিল। তবে বঙ্গবন্ধু সড়কসংলগ্ন বিভিন্ন গলিতে হকারদের পণ্য নিয়ে বসতে দেখা যায়। এসব গলির মধ্যে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার-সংলগ্ন চাষাঢ়া বালুর মাঠ সড়ক, এসকো হোমিও-সংলগ্ন চাষাঢ়া বালুর মাঠ, প্রেসিডেন্ট রোডের গলি, পুরোনো কোর্ট রোড, সাধু পৌলের গির্জাসংলগ্ন গলি।
প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নগরের চাষাঢ়া থেকে খানপুর পর্যন্ত নবাব সলিমুল্লাহ সড়ক, খানপুর হাসপাতালের সামনের সড়ক, নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়ক ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী সড়কে হকার বসার কথা ছিল। কিন্তু এসব সড়কে হকার বসতে দেখা যায়নি।
এদিকে ফুটপাতে হকার না থাকায় বঙ্গবন্ধু সড়কের কয়েক জায়গায় ফুটপাতে ফুলের টব রেখে সৌন্দর্যবর্ধনের চেষ্টা করেন দোকানিরা।
প্রেসিডেন্ট রোডে বসা কাপড় ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি চাষাঢ়া লুৎফা টাওয়ারের সামনে বসতাম। বঙ্গবন্ধু সড়কের চাষাঢ়া জমজমাট এলাকা। এখানে প্রচুর ক্রেতা আসেন। বেচাকেনা ভালো হয়। বিকল্প জায়গুলোতে লোকজনের সমাগম কম।’ আরেক হকার বিল্লাল হোসেন বলেন, তিনি মেডিনোভার সামনে বসতেন। পুলিশ উঠিয়ে দেওয়ায় এখানে দোকান বসিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন হকার বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি দেখছি। প্রশাসনের এই টাইট (কড়াকড়ি) অবস্থা থাকবে না।’
তবে নগরের কয়েকজন বাসিন্দা বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসানোকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে বলেন, ‘হকারদের কাছে পুরো নগরবাসীর জিম্মি থাকার প্রশ্নই ওঠে না। হকারদের কোথায় পুনর্বাসন করা হবে, এটা প্রশাসনের বিষয়। আমরা হকারমুক্ত ফুটপাত চাই। যেখানে আমরা সবাই নির্বিঘ্নেœহেঁটে চলাচল করতে পারব।’
নারায়ণগঞ্জ হকার্স সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক আসাদুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সড়কের হকাররা ওই জায়গাগুলোতে যেতে চাচ্ছে না। সাংসদ সেলিম ওসমান দেশে আসলেই আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
হকার্স আন্দোলনের অন্যতম নেতা জেলা সিপিবি সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা হকারদের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে না বসতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু হকাররা সুযোগ পেলেই বসে যায়। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও হকার্স আন্দোলনের নেতারা পুরোপুরি সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত হকারদের বসতে নিষেধ করছি।’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো হকারকে বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে বসতে দেওয়া হবে না। বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত হকারমুক্ত রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুযোগ পেলেই যাতে হকাররা ফুটপাতে বসতে না পারেন, সে বিষয়ে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ওই সড়কের ফুটপাতে হকার বসলে তাঁদের আটক করা হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।