দু্ই পা চলে গেল ট্রেনের নিচে...

শফিকুল ইসলাম
শফিকুল ইসলাম

ঢাকায় ফেরার জন্য ভোরেই বাড়ি থেকে রেলস্টেশনে এসেছিলেন শান্ত। তবে ততক্ষণে ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে। দৌড়ে ওঠার চেষ্টা করলেন। ঠিক তখনই পিছলে দুই পা চলে গেল ট্রেনের নিচে। শান্তর দুই পায়ের হাঁটুর নিচের হাড় থেঁতলে ভেঙে যায়।

শান্তর ভালো নাম শফিকুল ইসলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থীর সিরাজগঞ্জের কড্ডার শহীদ এম মনসুর আলী রেলস্টেশন থেকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসে করে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। পা দুটি রক্ষা পাবে কি পাবে না, এই অনিশ্চয়তা নিয়ে তিনি এখন চিকিৎসাধীন ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে।

 শফিকুলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদরে কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের বড় চাকলি গ্রামে। তাঁর বাবা শাহজাহান আলী একজন ব্যবসায়ী। তাঁকে নিয়ে পরিবারের আশা ছিল। তিনিও এগিয়ে যাচ্ছিলেন সে পথে।

দুর্ঘটনার পরপর আশপাশের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শামীমুল ইসলাম জানান, শান্তর দুই পায়ের হাঁটুর নিচের হাড় মারাত্মকভাবে ভেঙে থেঁতলে গেছে। তাঁর দুটি পায়ের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

গতকাল বিকেল পাঁচটায় পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখা মেলে শফিকুলের। স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা শফিকুলের পা থেকে বুক পর্যন্ত নীল রংয়ের পাতলা একটা কম্বলে ঢাকা ছিল। চোখের পাতা কখনো খুলছিলেন, কখনো বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। স্ট্রেচারের চারপাশ ঘিরে থাকা বন্ধুবান্ধব ও স্বজনেরা কিছুক্ষণ পরপর কম্বল তুলে দুই পায়ের অবস্থা দেখছেন।

শফিকুলের চাচা মনিরুজ্জামান জানান, ১৮ জানুয়ারি বাড়িতে এসেছিলেন শান্ত। তিন দিন পর গতকাল ভোরে বাড়ি থেকে বের হন। ধারণা করা হচ্ছে, কুয়াশার কারণে ট্রেনের হ্যান্ডেলটি ভেজা থাকায় তাঁর হাত পিছলে যাওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে। শান্তর সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন তাঁর ভগ্নিপতি আশরাফ আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শান্তকে দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। আরও দুই ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। পঙ্গু হাসপাতালে পায়ের এক্সরে করা হয়েছে।