শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ভিসিকে উদ্ধার ছাত্রলীগের

ছাত্রলীগের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আবদুস সালাম
ছাত্রলীগের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আবদুস সালাম

ছাত্রী নিপীড়নে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে উদ্ধার করেছেন ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপরাজেয় বাংলার সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি টিএসসি, কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ঘুরে উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে আসে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপরাজেয় বাংলার সামনে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি টিএসসি, কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ঘুরে উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে আসে।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে পাঁচ দফা দাবিতে ফটক ভেঙে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপাচার্য নিজ কার্যালয়ে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে তিনি সেখান থেকে বের হতে পারছিলেন না।

প্রশাসনিক কার্যালয়ের একাধিক ফটক ভেঙে উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজার সামনের করিডরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
প্রশাসনিক কার্যালয়ের একাধিক ফটক ভেঙে উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজার সামনের করিডরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।

বিকেলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে সংগঠনের ২০-২৫ জনের একটি দল উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে যান। এরপর ছাত্রলীগের আরও নেতা–কর্মী সেখানে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর কয়েক দফা হামলা চালিয়ে তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেন।

শিক্ষার্থীরা বের হওয়ার সময় বিভিন্ন ফটকের সামনে থাকা ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁদের ওপর আবারও হামলা চালান। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি লিটন নন্দীসহ কয়েকটি বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাদের বেধড়ক মারধর করেন।

বেলা একটার দিকে উপাচার্য কার্যালয় ভবনের কলাপসিবল গেটও ভাঙেন তাঁরা। ছবি: ফোকাস বাংলা
বেলা একটার দিকে উপাচার্য কার্যালয় ভবনের কলাপসিবল গেটও ভাঙেন তাঁরা। ছবি: ফোকাস বাংলা

হামলায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রাজীব কুমার দাস, তাজুয়ার, জহর লাল রায়, অপু, আরশাদ, উম্মে হাবিবা বেনজীর, রায়হান, জাফরুল নাদিম, রাসেল ও লিটন নন্দী।

উপাচার্যকে উদ্ধারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মারধর করে সরিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সাজিদ হোসেন
উপাচার্যকে উদ্ধারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মারধর করে সরিয়ে দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১৫ জানুয়ারি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে ছাত্রলীগ নেতারা ছাত্রদের হুমকি-ধমকি ও ছাত্রীদের ওপর নিপীড়ন করে আন্দোলন নস্যাৎ করে দেন। এর প্রতিবাদে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীরা ১৭ জানুয়ারি প্রক্টর কার্যালয়ের ফটক ভেঙে প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করেন। পরদিন অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে টানা আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কিল, ঘুষি মেরে ছত্রভঙ্গ করে দেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ সময় আহত হয় অন্তত ১০ জন। ছবি: সাজিদ হোসেন
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কিল, ঘুষি মেরে ছত্রভঙ্গ করে দেয় ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ সময় আহত হয় অন্তত ১০ জন। ছবি: সাজিদ হোসেন

শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রক্টরের পদত্যাগ, ছাত্র প্রতিনিধিসহ ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনার তদন্ত করা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাদের বহিষ্কার করা ও প্রশাসনের করা মামলা তুলে নেওয়া।