সেই ইউএনওর বিরুদ্ধে 'পাল্টা' মামলা

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননার অভিযোগে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলক কান্তি চক্রবর্তী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ আলীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার বিচারিক হাকিম আদালতে যুবলীগ কর্মী জয়দ্বীপ রায় বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

বিচারিক হাকিম রাজীব আহমেদ এ মামলার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। এ বিষয়ে ইউএনও পুলক কান্তি চক্রবর্তী বলেন, মামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে উপজেলা যুবলীগ নেতা মমিনুর রহমান ও বাবলু রায়সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। তার পাল্টা জবাব দিতে তাঁরা যুবলীগের এক কর্মীকে দিয়ে মামলাটি করিয়েছেন।

১৩ জানুয়ারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন মেলা তদারকি করতে যান ইউএনও পুলক কান্তি চক্রবর্তী। এ সময় তিনি মেলার মঞ্চের ওপর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক বাবলু রায় ও একই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মমিনুর রহমানের ব্যক্তিগত শুভেচ্ছা ব্যানার দেখতে পান। ইউএনও ব্যক্তিগত ব্যানারগুলো সরিয়ে ফেলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মমিনুর রহমান ও বাবলু রায়। তাঁরা ইউএনওকে মারতে তেড়ে যান এবং গালিগালাজ করেন। এ সময় ইউএনও কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটি কক্ষে আটকে রাখেন মমিনুর রহমানকে।

পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হবিগঞ্জ-২ (আজমিরীগঞ্জ-বানিয়াচং) আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ খান ঘটনাস্থলে যান। তিনি সমঝোতা করে ছাড়িয়ে নেন ওই যুবলীগ নেতাকে।

পরের দিন ১৪ জানুয়ারি মমিনুর রহমান ও বাবলু রায় এবং একই সংগঠনের কর্মী উকেত আলীসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে আজমিরীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়। সরকারি কাজে বাধা এবং ইউএনওকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে পিইআইও মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। ওই দিন বিকেলে পুলিশ উকেত আলীকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ নিয়ে ১৪ ও ১৬ জানুয়ারি প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

একই ঘটনায় আজ বুধবার যুবলীগ কর্মী জয়দ্বীপ রায়ের করা মামলার আরজিতে বলা হয়, ১৩ জানুয়ারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন মেলায় বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্থানীয় সাংসদ আবদুল মজিদ খানের ছবিসংবলিত দু-তিনটি শুভেচ্ছা ব্যানার টাঙানো ছিল। ইউএনও, পিআইও এবং উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের কার্যসহকারী জাকারিয়া ওই ব্যানারগুলো ছিঁড়ে ফেলেন এবং পদদলিত করেন।

আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আদালতের বিচারিক হাকিম রাজীব আহমেদ মামলার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানির দিন ধার্য করেন। ওই দিন প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ বাদীকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়।

এ মামলার বিষয়ে ইউএনও বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে পিআইও মোহাম্মদ আলীর দায়ের করা মামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই মিথ্যা মামলাটি করা হয়েছে।

পলাতক থাকায় যুবলীগ নেতা মমিনুর রহমান ও বাবলু রায়ের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।