রেলে কাটা পড়ে দুই পা হারালেন ছাত্রী

কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের ইঞ্জিনে দুই পা কাটা পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। আজ বেলা দেড়টার দিকে রেলস্টেশনে ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রেললাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় একটি ইঞ্জিন ঘোরানো হচ্ছিল। এর নিচে তখন চাপা পড়েন।

আহত ছাত্রীর নাম রুবিনা আক্তার (২২)। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে রেলওয়ে পুলিশ।

রুবিনা আক্তার পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের মৃত রবিউল ইসলামের মেয়ে। ঢাকার সদরঘাট এলাকায় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করছেন। আজ গ্রামের বাড়ির যাওয়ার উদ্দেশে কমলাপুরে যান তিনি।

আহত রুবিনা জানান, তিনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন।

রেলওয়ে পুলিশের ওসি জানান, বেলা দেড়টার দিকে মেয়েটি ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের নিচ দিয়ে (রেললাইনের ওপর দিয়ে) হেঁটে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি ইঞ্জিন ঘোরানোর সময় মেয়েটি এর নিচে পড়েন। তাঁর দুটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মেয়েটিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রেলওয়ে পুলিশের কনস্টেবল মো. ইউনুস বলেন, বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বেলা তিনটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি।

আমাদের পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, শান্তিনগর এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থী রুবিনা আক্তার অনেকে কষ্ট করে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিন বছর আগে বাবা মারা যান। তিন ভাইবোনের মধ্যে রুবিনা মেজ। বড় বোন জোলেখা মানসিক প্রতিবন্ধী। ছোট ভাই রুবেল উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ে। রুবিনা বিনয়পুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করে। এলাকার কালীগঞ্জ কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।

এলাকার স্কুলশিক্ষক মহিলাল রায় মোবাইলে বলেন, মেধাবী রুবিনার সংসার চলে অভাব অনটনের মধ্যে। বৃত্তির টাকা, গরু ছাগল আর হাঁসমুরগী পালন করে লেখাপড়া চালিয়েছে রুবিনা।

এলাকার ইউপি সদস্য সুরুজ্জামান মোবাইলে বলেন, ‘এমন খবর পেয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

এর আগে ২২ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার সময় পড়ে গিয়ে দুই পা থেঁতলে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শফিকুল ইসলামের (২২)।