যুবককে ধরতে ম্যাজিস্ট্রেটের দৌড়

সোমবার সকাল দশটা। কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার জেএমজি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পেছনে সাধারণ বেশে ওত পেতে ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ওই কেন্দ্রের দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)।

১০টা ১০ মিনিটের দিকে এক যুবক পরীক্ষা কেন্দ্রের একটি ভবনের পেছনের দিকের এক কক্ষের জানালার কাছে যান। জানালার ফাঁক দিয়ে এক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রশ্নের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে নিয়ে দৌড় দেন। জাহাঙ্গীর আলম এ দৃশ্য দেখে ওই যুবককে ধরতে পেছন পেছন দৌড় দেন। কিন্তু যুবক দ্রুত কাছের একটি বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়েন। পরে ওই যুবকের খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে এসব তথ্য দিয়ে আরও বলেন, এর কিছুক্ষণ পর একই জায়গায় একইভাবে প্রশ্ন নেওয়ার চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি। তবে এবার পার পায়নি ওই ব্যক্তি। হাতেনাতে ধরে ফেলা হয় তাঁকে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ওই ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম আতিয়ার রহমান (৩৫)। আতিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য।

এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম জানালার পাশের আসনের সেই পরীক্ষার্থীর কাছে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন ফারজানা আক্তার নামের এক ছাত্রী সেখানে পরীক্ষা দিচ্ছে। ফারজানা ম্যাজিস্ট্রেটকে জানায়, রাব্বী নামের এক যুবক তার কাছে থাকা ইংরেজি প্রশ্নের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে নিয়ে গেছে। একইভাবে আতিয়ারও প্রশ্ন নেওয়ার চেষ্টা করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই ছাত্রীকে বহিষ্কার করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জানতে পেরেছি, মোবাইলে প্রশ্নের ছবি তুলে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া যুবক মো. রাব্বী চক বিলগাথুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।’ তিনি বলেন, গোপন তথ্য ছিল, ওই কেন্দ্রে ঠিক ওই জানালা দিয়ে প্রশ্ন ফাঁস হয়। সেই প্রশ্নের উত্তর ঠিক করে আবার কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এ জন্য তিনি সাধারণ বেশ নিয়ে সোমবার সেখানে অবস্থান নেন।