ওয়ান স্টপ সার্ভিস বিল পাস

বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ধরনের সেবা এক ছাতার নিচে আনার লক্ষ্যে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস বিল, ২০১৮’ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এই আইনের ফলে বিনিয়োগকারীরা এক জায়গা থেকে ২৭ ধরনের সেবা পাবেন।

আজ সোমবার সংসদের বৈঠকে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন সংসদের কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বিলটির ওপর বিরোধীদলীয় সাংসদদের দেওয়া একাধিক সংশোধনী, জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তির পর তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে বিলটি পাসের বিরোধিতা করে জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ২৭টি জায়গার অনুমতি আনতে হবে, অর্থাৎ ২৭টি জায়গায় ঘুষ দিতে হবে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস নয়, এটি হবে ‘ওয়ান স্টপ ঘুষ’।

বিরোধীদলীয় সাংসদদের অন্যান্য বক্তব্যের জবাব দিলেও মন্ত্রী ঘুষের অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

বিলটি আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ‘কেন্দ্রীয় ওয়ান স্টপ সার্ভিস কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

এ আইনের ফলে ট্রেড লাইসেন্স, জমি নিবন্ধন, নামজারি, পরিবেশ ছাড়পত্র, নির্মাণ অনুমোদন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সংযোগ, টেলিফোন-ইন্টারনেট সংযোগ, বিস্ফোরক লাইসেন্স, বয়লার সার্টিফিকেটসহ ২৭টি ক্যাটাগরির সেবা এক জায়গায় পাওয়া যাবে। ফলে কোনো বিনিয়োগকারীকে প্রাথমিক অনুমোদন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার জন্য আর বিভিন্ন কার্যালয়ে ঘুরতে হবে না। অনলাইনে সেবা পাওয়া যাবে। বিনিয়োগকারীদের কোন সেবা কত দিনের মধ্যে দিতে হবে, তা বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হবে।

নতুন এই আইনে ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিশ্চিত করতে একটি কমিটি করার কথা বলা হয়েছে। কমিটির প্রধান হবেন একজন মন্ত্রী।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ নিয়ে এক বিবৃতিতে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ ওয়ান স্টপ সার্ভিস দিয়ে আসছে। কিন্তু এ ব্যবস্থা আরও কার্যকর করে তোলা একান্ত প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও জোন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদানের পদ্ধতিকে বিধিবদ্ধ করা, এ আইনকে প্রচলিত অপরাপর সংশ্লিষ্ট আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা দিতে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’

গত বছরের ৮ মে মন্ত্রিসভা বিলটির খসড়া অনুমোদন দিয়েছিল। গত ১১ সেপ্টেম্বর সংসদে বিলটি উত্থাপন করার পর পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।

বালাইনাশক বিল সংসদে: সোমবার ‘বালাইনাশক (পেস্টিসাইডস) বিল, ২০১৮’ জাতীয় সংসদে তুলেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বিলে কৃষি উপকরণ বালাইনাশকের আমদানি, উৎপাদন, বিক্রয়, বিতরণ ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

পরে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।