ফি বাড়লেও মিলছে না সেবা

বেনাপোল স্থলবন্দর। ফাইল ছবি
বেনাপোল স্থলবন্দর। ফাইল ছবি
• ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীদের কাছ থেকে ফি বাবদ ৪০ টাকা আদায় করা হয়
• কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না তাঁরা।

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতকারী যাত্রীদের যেতে হয় আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল দিয়ে। টার্মিনালটি ব্যবহারের জন্য যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ‘যাত্রী সুবিধা ফি’। এ জন্য দিনে প্রায় ৩ লাখ টাকা আদায় করা হলেও তেমন সেবা মিলছে না। 

যাত্রীরা বলছেন, টার্মিনালটি ব্যবহারের জন্য আগে যাত্রী সুবিধা ফি ছিল ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা। গত ১ জানুয়ারি থেকে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০ টাকা ৭০ পয়সা। বাস্তবে নেওয়া হয় আরও বেশি। টার্মিনাল দিয়ে দিনে কমপক্ষে ৭ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। সবচেয়ে কম করে ধরলে যাত্রী সুবিধা ফি হিসেবে দিনে প্রায় ৩ লাখ টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু যাত্রী সুবিধা বলতে রয়েছে বিশ্রামকক্ষে নোংরা শৌচাগার, ৬৬টি চেয়ার ও একটি বন্ধ টেলিভিশন।
জানতে চাইলে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, টার্মিনালে যাত্রী সুবিধা ফি ৪০ টাকা ৭০ পয়সা করা হয়েছে। সেই টাকাই নেওয়া হচ্ছে। এর বেশি কেউ টাকা নিলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকত। এখন বিশ্রামকক্ষে তারা বিশ্রাম নিতে পারে।
স্থলবন্দরটির অভিবাসন পুলিশের ওসি তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এই বন্দর দিয়ে দিনে ৭ থেকে ৮ হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। কখনো কখনো এ সংখ্যা ১২ হাজার পর্যন্ত হয়।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাতায়াতকারী যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বেনাপোল বন্দরের তল্লাশিচৌকির পাশে নির্মাণ করা হয় আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনাল। ছয়তলা ভিত্তির ওপর তিনতলা পর্যন্ত ১ লাখ ৩ হাজার ৬৭৫ বর্গফুটের এই ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের নভেম্বরে। টার্মিনালটির উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ২ জুন। এটি ব্যবহারের জন্য চারটি খাতে যাত্রী সুবিধা ফি নির্ধারণ করা হয় ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা। ১ জানুয়ারি তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৪০ টাকা ৭০ পয়সা। শতকরা ১৫ টাকা হারে ভ্যাট ৫ টাকা ৩১ পয়সা।
যাত্রী ও বন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য এই টার্মিনাল করা হয়েছে। যাত্রীরা টার্মিনালে ঢুকে প্রথমে বিশ্রামকক্ষে আসবে। এরপর ভবনের একতলা ও দোতলায় অবস্থান করবে এবং তাদের জন্য রাখা সুবিধা উপভোগ করবে। এরপর তারা টোল আদায় কক্ষে ফি এবং ব্যাংক বুথে ভ্রমণ কর দিয়ে পাশের ভবনে অবস্থিত কাস্টমস ও বহির্গমন বিভাগে যাবে। এ জন্য নকশায় টার্মিনাল ভবনের সামনে একই সময়ে পাঁচটি বড় বাস দাঁড়ানোর মতো খালি জায়গা রাখা হয়েছে। নিচতলায় খোলা বারান্দা, কাচ দিয়ে ঘেরা যাত্রীদের বিশ্রামকক্ষ, পর্যাপ্ত শৌচাগার, ব্যাংকের বুথ ও টোল আদায় কক্ষ রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে যাত্রীদের জন্য রেস্তোরাঁ, শৌচাগারসহ বিশ্রামকক্ষ।
ভারতে যাচ্ছিলেন মাগুরার ইকতিয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগে স্লিপে লেখা থাকত ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা। কিন্তু নেওয়া হতো ৪০ টাকা। আজ স্লিপে লেখা রয়েছে ৪০ টাকা ৭০ পয়সা। নেওয়া হলো ৪৫ টাকা। প্রতিবাদ করলাম, কাজ হলো না।’