৬০ ভাগ কম পানিতে বোরো ধান হবে, ফলনও বেশি

দেশে ধান উৎপাদনে মোট সেচের ৯৩ ভাগ সেচ প্রয়োজন বোরো মৌসুমে। সেচনির্ভর বোরো ধান চাষে জমির প্রকারভেদে ১৫-৩০ বার সেচ দিতে হয়। এতে ধানের উৎপাদন খরচ বহুগুণ বেড়ে যাচ্ছে। বিপুল পরিমাণে পানি উত্তোলনের কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে।

বোরো ধান উৎপাদনে ৬০ ভাগ পানি সেচ কম লাগে—এমন একটি চাষপদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান। শুকনো পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষের এই পদ্ধতির নাম ‘ড্রাই ডাইরেক্ট সিডেড টেকনোলজি’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের আয়োজনে কৃষি অনুষদ সম্মেলন কক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ‘রেজাল্ট শেয়ারিং’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই এ পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হয়।

মশিউর রহমান বলেন, ‘নয় বছর গবেষণার পর ৬০ ভাগ কম সেচে বোরো ধান চাষের পদ্ধতি কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর অপেক্ষায়। এ পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে ধানের উৎপাদন কমে না বরং অনেকাংশেই বাড়ে। এ পদ্ধতিতে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুরে আমরা ১১৭ জাতের ধান নিয়ে গবেষণা করেছি।’

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে গবেষক বললেন, নতুন পদ্ধতিতে প্রয়োজন মতো পাঁচ থেকে আটটি সেচ দিতে হয়। যেখানে প্রচলিত বোরো চাষে জমির ভিন্নতা অনুযায়ী ১৫-৩০ বার সেচ প্রয়োজন হয়। নতুন এ পদ্ধতিতে চাষ করলে প্রতি হেক্টরে প্রায় ৭০০ কোটি লিটার পানির সাশ্রয় হবে। যাতে ডিজেল ও বিদ্যুৎ খরচ কমবে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান অধ্যাপক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক লুৎফুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক মো. আলমগীর হোসেন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবদুল মজিদ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান।