নকল ঠেকানোয় পরীক্ষার্থীদের তাণ্ডব!

চলমান এসএসসি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের রৌমারীতে নকল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেপে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। ছবি: প্রথম অালো
চলমান এসএসসি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের রৌমারীতে নকল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেপে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। ছবি: প্রথম অালো

চলমান এসএসসি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের রৌমারীতে নকল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেপে গিয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে। শনিবার উপজেলার যাদুরচর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শেষে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীদের তাণ্ডবে যোগ দেয় বহিরাগতরাও। এ সময় দায়িত্বরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করেও রাখা হয়।

শনিবার ছিল গণিত বিষয়ের পরীক্ষা। যাদুরচর উচ্চবিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব মইনুল হক বলেন, মোট ১ হাজার ১৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৭৭ জন অংশ নেয়। রৌমারী সিজি জামান উচ্চবিদ্যালয়সহ মোট সাতটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষা শেষে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ইউএনওকে দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় তারা ইউএনওর গাড়ি, শিক্ষকদের মোটরসাইকেল, সিসি ক্যামেরা, বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দেয়ালসহ দরজা-জানালা ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। শিক্ষকেরা ইউএনওকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় এক পুলিশ সদস্যসহ ১০–১২ জন আহত হয়।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রৌমারীর ইউএনও দীপংকর রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর ১০ মিনিট পর আমি কেন্দ্রে উপস্থিত হই। পরীক্ষা শেষে বাচ্চারা মূলত হট্টগোল করে। এ সময় তারা আমার গাড়ি, শিক্ষকদের ১৩টি মোটরসাইকেলসহ স্কুলে লাগানো ১৫টি সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। ভেঙে ফেলা হয় স্কুলের নিরাপত্তা দেয়াল ও কেন্দ্রের দরজা-জানালা। তাদের তাণ্ডবে স্থানীয়রাও অংশ নেয়।’

রৌমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিকেল পর্যন্ত ইউএনও দীপংকর রায়, সার্কেল এএসপি সিরাজুল ইসলাম, ওসি জাহাঙ্গীর আলমসহ উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। মূলত ভুল বোঝাবুঝির কারণে পরীক্ষার্থীরা এ হামলা করে। পরে স্থানীয় সুযোগসন্ধানীরা এতে অংশ নিয়ে তাণ্ডব চালায়।

রৌমারী অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্কেল এএসপি সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ভিডিও দেখে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা হবে। এ ছাড়া তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।