নেতাদের কাছেও যাচ্ছেন সিএইচসিপিরা

চাকরি রাজস্ব করার দাবিতে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনে বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের (সিএইচসিপি) সদস্যরা। গতকাল সকালে।  ছবি: প্রথম আলো
চাকরি রাজস্ব করার দাবিতে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনে বাংলাদেশ কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের (সিএইচসিপি) সদস্যরা। গতকাল সকালে। ছবি: প্রথম আলো
• আন্দোলনের কারণে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
• স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবারকল্যাণ সহকারীরা ক্লিনিক চালু রাখার চেষ্টা করছেন।

চাকরি রাজস্ব খাতে নেওয়ার দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি)। গতকাল রোববার তাঁদের পৃথক দুটি প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির দুজন নেতার সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবির কথা জানিয়েছে।

এদিকে সিএইচসিপিদের আন্দোলনের কারণে দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবারকল্যাণ সহকারীরা ক্লিনিক চালু রাখার চেষ্টা করছেন।

প্রথম আলোমহেশখালী (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সিএইচসিপিদের আমরণ অনশন কর্মসূচির কারণে উপজেলার ২৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ আছে। গতকাল সকাল ১০টায় উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের কায়দাবাদ কমিউনিটি ক্লিনিকে তালা ঝুলতে দেখা যায়। সেবা নিতে আসা কয়েকজনের সঙ্গে প্রথম আলোর প্রতিনিধির কথাও হয়। তাঁরা জানিয়েছেন, তিন সপ্তাহ ধরে তাঁরা সেবা পাচ্ছেন না। দুপুর ১২টায় মাতারবাড়ী ইউনিয়নের মাইজপাড় কমিউনিটি ক্লিনিকেও তালা ঝুলতে দেখা গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবারকল্যাণ সহকারীর মাধ্যমে ক্লিনিক চালু রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. আবুল হাসেম প্রথম আলোকে বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপিদের কাজে তিন দিন সহায়তা করেন স্বাস্থ্য সহকারী, তিন দিন পরিবারকল্যাণ সহকারী। সিএইচসিপিরা আন্দোলনে থাকলেও অন্যরা ক্লিনিকে কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে নিজ নিজ এলাকায় সব কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছি। সিএইচসিপিরা কাজ না-ও করতে পারেন, কিন্তু ক্লিনিকে তালা লাগানোর অধিকার তাঁদের নেই।’

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার সব কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। গতকাল ঘুটাবাছা কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা গেছে, একজন স্বাস্থ্য সহকারী কাজ করছেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ২১ জন সেবা নিতে এসেছিলেন।

এদিকে ৮ ও ৯ ফেব্রুয়ারি বিরতি দিয়ে গত শনিবার থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আবারও আমরণ অনশন কর্মসূচি করেছেন সিএইচসিপিরা। বাংলাদেশ সিএইচসিপি অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো. শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের একটিই দাবি, চাকরি রাজস্বকরণ। এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলবে।’

গতকাল অনশনরত সিএইচসিপিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁদের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে তাদের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করার অনুরোধ জানিয়েছে। আরেকটি দল সংসদে বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে দেখা করে। গত সপ্তাহে তাঁরা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সঙ্গেও দেখা করেন বলে শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন।

সরকারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সরকার নীতিগতভাবে সিএইচসিপিদের রাজস্ব খাতে নিতে চায় না। সরকারের এই অবস্থান থেকে সরে আসার সম্ভাবনা খুব কম।