বরিশাল থেকে ১১ পথে বাস চলাচল ফের বন্ধ

>
  • বরিশাল ও ঝালকাঠির জেলা বাস মালিক সমিতির দ্বন্দ্ব।
  • আড়াই মাসে তিন দফায় বাস বন্ধ হলো।
  • হাজারো যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছে।

এ নিয়ে গত আড়াই মাসে এসব পথে তিন দফায় সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ হলো। এর আগে গত ১৭ থেকে ২১ ডিসেম্বর এবং ৩ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি ২১ দিন এ পথে বাস চলাচল বন্ধ ছিল।

এই ১১টি পথ হচ্ছে বরিশাল থেকে ঝালকাঠি, ভান্ডারিয়া, আমুয়া, নলছিটি, বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা, পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, বাগেরহাট, মোল্লারহাট ও খুলনা।

কয়েকজন যাত্রী বলেন, গতকাল সকালে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে ওই ১১ পথের উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। আগের মতোই রূপাতলী থেকে৭ কিলোমিটারদূরে ঝালকাঠির রায়পুরা এলাকায় নতুন স্ট্যান্ড তৈরি করে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতি সীমিত আকারে এসব পথে কিছু বাস চালাচ্ছে। এ জন্য নগর থেকে বিকল্প পরিবহনে করে রায়পুরায় গিয়ে বাসে উঠতে হচ্ছে। এতে তাঁরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

ঝালকাঠি জেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. বাহাদুর চৌধুরী গতকাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই ১১ পথে বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলার মালিক সমিতির বাস সমন্বয় করে চলাচল করছে। কিন্তু বরিশাল-কুয়াকাটা পথে ঝালকাঠি জেলা বাস মালিক সমিতির কোনো বাস চলতে দেওয়া হচ্ছে না। বরিশাল-কুয়াকাটা পথে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার আওতায় আট কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এ আট কিলোমিটার সড়ক বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা জেলার বাস মালিক সমিতি ব্যবহার করলেও ঝালকাঠি মালিক সমিতির বাস চলতে দেওয়া হচ্ছে না।

মো. বাহাদুর চৌধুরী বলেন, ‘এ জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য হিস্যা দাবি করে আসছি। বেশ কয়েকবার প্রশাসন বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির নেতাদের এ দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ করেছে। কিন্তু বরিশালের মালিক সমিতির নেতারা তা অগ্রাহ্য করায় আমরা গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দিই।’

শ্রমিক ইউনিয়নের এ নেতা আরও বলেন, ‘পরে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১ ডিসেম্বর বিকেল থেকে বরিশাল থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়। এরপর ২ জানুয়ারি হিস্যার বিষয় নিয়ে একটি সভায় রূপাতলীর বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির নেতাদের নিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বৈঠক আহ্বান করলেও সেখানে বরিশাল বাস মালিক সমিতির নেতারা আসেননি। ফলে আমরা ৩ জানুয়ারি থেকে আবারও বরিশাল থেকে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করে দিই। এরপর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফরকে কেন্দ্র করে গত ২৪ জানুয়ারি থেকে প্রশাসনের আশ্বাসে আবারও রূপাতলী থেকে সরাসরি বাস চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর দীর্ঘদিন পার হয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে কোনো সমাধান হয়নি। বাধ্য হয়ে আবারও রূপাতলী থেকে সরাসরি বাস চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মো. বাহাদুর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত ঝালকাঠির ওপর দিয়ে বরিশালের কোনো বাস চলাচল করতে দেওয়া হবে না।’

এ বিষয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান মাহামুদ বলেন, ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতি বুধবার থেকে তাঁদের কোনো বাস ঝালকাঠিতে ঢুকতে দিচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

জানতে চাইলে বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান গতকাল বলেন, ‘নতুন করে বাস চলাচল বন্ধ হওয়ার বিষয়টি এখনো আমি জানি না। বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় শুরু থেকেই উদ্যোগ নিয়ে বিষয়টি নিরসনের চেষ্টা করে আসছেন। এখন নতুন করে সমস্যা হলে তিনি অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।’