কোটার পক্ষে ও বিপক্ষে কর্মসূচি

সরকারি চাকরিতে কোটা–ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে ও বিপক্ষে গতকাল দুটি সংগঠনের ব্যানারে জড়ো হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায়।  প্রথম আলো
সরকারি চাকরিতে কোটা–ব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে ও বিপক্ষে গতকাল দুটি সংগঠনের ব্যানারে জড়ো হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায়। প্রথম আলো
> দুটি সংগঠন জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হয়
পুলিশ সেখানে কাউকেই দাঁড়াতে দেয়নি

সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটাব্যবস্থা সংস্কারের পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে দুটি পক্ষ। ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের’ ব্যানারে কয়েক শ চাকরিপ্রার্থী কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। আর সংস্কার প্রস্তাবের নামে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতা-কর্মীরা।

 অভিযোগ রয়েছে, সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা রাখার কারণে প্রকৃত মেধাবীরা যোগ্যতা থাকার পরও চাকরি পাচ্ছেন না। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরাও বলে আসছেন, কোটা পদ্ধতির অপব্যবহার হচ্ছে।

কোটার পক্ষে-বিপক্ষে দুটি সংগঠন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার নিয়ে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হয়। তবে পুলিশ সেখানে কাউকেই দাঁড়াতে দেয়নি। ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের কয়েকজনের সঙ্গে পুলিশের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। আর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্যরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করেন। তাঁরাও রাজু ভাস্কর্যের সামনে কয়েক মিনিট অবস্থান করেন।

ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে চাকরিপ্রার্থীরা শাহবাগ থেকে মিছিল করে টিএসসিতে আসেন। এর আগেও তাঁরা বিভিন্ন সময় কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। সেখানে সংগঠনের আহ্বায়ক ইমরান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রকৃত মেধাবীরা যাতে দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক জায়গায় যেতে পারে, সে জন্য আমরা কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। আমরা কোটার বিপক্ষে নই। কোটা কমিয়ে ১০ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি।’

ইমরান সাংবাদিকদের একটি লিফলেট দেন। এতে কোটা সংস্কার করে সহনীয় মাত্রায় কমিয়ে আনা, কোটার বিপরীতে যোগ্য প্রার্থী না থাকলে ওই পদে মেধাক্রম থেকে নিয়োগ দেওয়া, কোটাধারী ও মেধাক্রমের জন্য অভিন্ন কাটমার্ক নির্ধারণ করাসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়।

বিক্ষোভে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থীরা যোগ দেন। তাঁরা জানান, ফেসবুক ইভেন্টের মাধ্যমে তাঁরা কর্মসূচি ডেকেছিলেন। তাতে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছেন। এ সময় তাঁরা ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, কোটা বৈষম্যের স্থান নাই’, ‘কোটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। আগামী বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগসহ সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি শেষ করা হয়।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘রিট করে স্বাধীনতা পাইনি, যুদ্ধ করে পেয়েছি’ ও ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কোটার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে ও সর্বক্ষেত্রে নির্ধারিত মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন’। প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বক্তারা কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারীদের কড়া সমালোচনা করেন।

জানতে চাইলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ব্যানারে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির ইন্ধনে এসব কর্মসূচি করানো হচ্ছে।’