এক সঙ্গে থাকলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ ও ভারত

হাসানুল হক ইনু । ফাইল ছবি
হাসানুল হক ইনু । ফাইল ছবি

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ হলেও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আস্থার সংকট রয়েছে। সম্পর্ককে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া ছাড়া কোনো পথ নেই। দুই দেশের অতীতের মাঝে যেহেতু মিল আছে, একসঙ্গে থাকলে দুই দেশ এগিয়ে যেতে পারবে।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ-ভারত গণমাধ্যম সংলাপ-২০১৮’ শীর্ষক তিন দিনের আলোচনার উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট অফ কনফ্লিক্ট, ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (আইসিএলডিএস) আয়োজিত ওই সংলাপে দুই দেশের বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা অংশ নিচ্ছেন।

আইসিএলডিএসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জমিরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের পরিচালক ও সংলাপের আহ্বায়ক শ্যামল দত্ত।

তথ্যমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার কথা বলতে গিয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, পঁচাত্তর পরবর্তী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সম্পর্কের বাঁক পরিবর্তন এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোর নতুন ধারার প্রসঙ্গ টানেন। দুই দেশের সমস্যার কথা বলতে গিয়ে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সংকটের প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁর মতে, এক দেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী কোনো সমস্যায় পড়লে অন্য দেশে এর প্রভাব পড়ে।

তথ্যমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে রাষ্ট্র বহির্ভূত শক্তিকে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, আন্ত-সীমান্ত সন্ত্রাসী ও ধর্মীয় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি সার্কভুক্ত দেশগুলোতে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের মদদ দিচ্ছে। আন্তসীমান্ত আর ধর্মীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে কখনো কখনো আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন এমনকি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের মাঝে আস্থার সংকট রয়েছে। আত্মবিশ্বাসের সংকট আছে। আমরা নিজেদের দুর্বলতা বুঝলেও, শক্তিমত্তা কি সেটা বুঝতে পারি না। দুই দেশের সম্পর্কের স্বার্থেই আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। অন্য কোনো পথ নেই। কোনো কোনো রাজনৈতিক পক্ষের সমস্যার সমাধান না করে তা জিইয়ে রাখার এক ধরনের প্রবণতা আছে। আমাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে, এগুলো ফেলে রেখে লাভ নেই। গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যৌথ ইশতেহারে দেখা গেছে, একটা একটা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা আছে। যেটা অত্যন্ত ইতিবাচক।’

উদ্বোধনী অধিবেশনে দিল্লি প্রেস ক্লাবের সভাপতি গৌতম লাহিড়ি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে স্পষ্ট করে বললে গত ৯ বছরে সম্পর্ককে যৌক্তিক উচ্চতায় নিয়ে যেতে যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এখনো যে অনাস্থা রয়েছে তা আমি অস্বীকার করতে পারি না। দুই নিকট প্রতিবেশীর সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে যথেষ্ট সদিচ্ছাও রয়েছে।

মঙ্গলবার দুটি এবং আগামী বুধবার একটি কর্ম অধিবেশনে দুই দেশের গণমাধ্যম কর্মীরা দুই দেশের গত ৯ বছরের সম্পর্ক এবং সামনে এগোনোর পথ, বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া ভারত থেকে আসা গণমাধ্যমের বিশিষ্টজনেরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একুশের প্রথম প্রহরে তাদের শহীদ মিনারে যাওয়ার কথা রয়েছে।