বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ, অচলাবস্থা

বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতকাল সোমবারও কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন। এ কারণে নগর ভবনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ না করা পর্যন্ত তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না।

দীর্ঘদিন বকেয়া বেতন চেয়ে না পেয়ে গত রোববার সব দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রেখে নগর ভবনের দোতলায় অবস্থান নেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকালও তাঁরা একই দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সিটি করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ কাউন্সিলরেরা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, সিটি করপোরেশনের সব দপ্তর ফাঁকা পড়ে আছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দাপ্তরিক কাজ না করে মেয়রের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। এ সময় বকেয়ার
দাবিতে থেমে থেমে স্লোগান চলে। আন্দোলনরত কর্মচারীদের নিবৃত্ত করতে জ্যেষ্ঠ কাউন্সিলরেরা চেষ্টা করলেও কর্মচারীরা তাঁদের আহ্বানে সাড়া দেননি। পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন ও ১৭ মাসের ভবিষ্য-তহবিল বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তাঁরা।
আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা বলেন, অনেকবার দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবে বকেয়া বেতন-ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। গত জানুয়ারিতে গত বছরের আগস্টের বেতন দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের পাঁচ মাস ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মীদের চার মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। এবার আর আশ্বাস নয়, বকেয়া পরিশোধ করার পরই কাজে যোগ দেবেন তাঁরা।
দীপক লাল মৃধা অভিযোগ করেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন না দেওয়া হলেও ঠিকাদারদের লাখ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করছে কর্তৃপক্ষ। কর্মচারীদের বেতন দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ‘পার্সেন্টেজ’ পায় না। কিন্তু ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করলে মোটা অঙ্কের পার্সেন্টেজ মেলে। তাই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধের চেয়ে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধে আগ্রহী কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি মন্ত্রণালয় থেকে সিটি করপোরেশনে পাঁচ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এসেছে। তা থেকে ঠিকাদারদের বকেয়া বিল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ খবর পেয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিটি করপোরেশনের হিসাব শাখায় তালা ঝুলিয়ে দেন বেতনবঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর একদিন বাদে গত রোববার থেকে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা।
জানতে চাইলে মেয়র আহসান হাবিব কামাল পবলেন, ‘রাজস্ব আয় না বাড়ার কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া পড়েছে। উন্নয়নকাজের সঙ্গে বেতন-ভাতার সম্পর্ক নেই। আমি বরিশালের বাইরে। মঙ্গলবার (আজ) ফিরব। তারপর বকেয়া পরিশোধসহ যাবতীয় বিষয় নিয়ে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’