যা দেখাল ছাত্রলীগ

>
  • প্রক্টরের কার্যালয়, ছয়টি শ্রেণিকক্ষ ভাঙচুর।
  • বাস, কার, মাইক্রোবাস, পিকআপসহ ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর।
  • দুই হলে তল্লাশি।
  • ২টি এলজি, ১০টি রামদা উদ্ধার।
কাচের টুকরোগুলো তাণ্ডবের সাক্ষ্য হিসেবে রয়ে গেছে। গতকাল বেলা তিনটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন পুলের কোনো গাড়িই ছাত্রলীগের তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি।  ছবি: সৌরভ দাশ
কাচের টুকরোগুলো তাণ্ডবের সাক্ষ্য হিসেবে রয়ে গেছে। গতকাল বেলা তিনটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন পুলের কোনো গাড়িই ছাত্রলীগের তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি। ছবি: সৌরভ দাশ

ভাঙচুরের তালিকায় না থাকলেও ট্রেনের ওপর কম ঝাল মেটাননি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। চট্টগ্রাম শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চলাচল করা শিক্ষার্থীদের শাটল ট্রেনের হোস পাইপ গতকাল সকালেই কেটে দেওয়া হয়। এরপর শহর এবং ক্যাম্পাসের মধ্যে শাটল ট্রেনে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

ছাত্রলীগের এই ক্ষোভের কারণ, সোমবার বিকেল থেকে কয়েক দফা ক্যাম্পাসে সংগঠনের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল এবং শাহ আমানত হলে তল্লাশি চালায় পুলিশ। রাত ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার তল্লাশিতে ২টি এলজি এবং ১০টি রামদা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া পরিচয়পত্র ছাড়া হলে অবস্থান করায় ৮ কর্মীকে আটক করে পুলিশ। অভিযান চালানোর সময় পুলিশ ‘বাড়াবাড়ি’ করায় গতকাল ছাত্রলীগের একটি পক্ষ ক্যাম্পাসে অবরোধ ডাকে। অবরোধ সফল করতে গিয়েই এই বিশৃঙ্খলা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, গাড়ি ভাঙচুর করা নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারী। তাঁরা চট্টগ্রামের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবেও ক্যাম্পাসে পরিচিত। পরিবহন পুলে গাড়ি ভাঙচুর করা নেতা-কর্মীরা সেখান থেকে বিশ্বিদ্যালয়ের কলাভবনে নাট্যকলা বিভাগের সামনে আসেন। এই বিভাগের পাশেই প্রক্টরের কার্যালয়। তাঁরা প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে দ্বিতীয় দফায় ভাঙচুর শুরু করেন। প্রথমে শ্রেণিকক্ষ, পরে প্রক্টরের কার্যালয় শেষে কার্যালয়ের সামনে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করেন তাঁরা।

কার্যালয়, শ্রেণিকক্ষ ও গাড়ি ভাঙচুরের সঙ্গে নেতা-কর্মী জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলমগীর টিপু।

যারা ভাঙচুর করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। এ সময় সেখানে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন সেকান্দর চৌধুরী, সহকারী প্রক্টর ও সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন। অতর্কিতভাবে কিছু ছাত্র এসে তাঁর কার্যালয় ও তাঁকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। সরে গিয়ে তিনি রক্ষা পান। অন্যরা আত্মরক্ষার জন্য নিচে বসে পড়েন।