জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নিয়ম মানেনি কালিশুরী পুলিশ ফাঁড়ি

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে টাঙানোর বিধি থাকলেও তা মানা হয়নি কালিশুরী পুলিশ ফাঁড়িতে। বাউফল, পটুয়াখালী, ২১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: এ বি এম মিজানুর রহমান
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে টাঙানোর বিধি থাকলেও তা মানা হয়নি কালিশুরী পুলিশ ফাঁড়িতে। বাউফল, পটুয়াখালী, ২১ ফেব্রুয়ারি। ছবি: এ বি এম মিজানুর রহমান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যেখানে প্রশাসন ঘুরে ঘুরে জাতীয় দিবসে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম শেখাচ্ছে, তখন উল্টোটা দেখা গেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায়। সেখানে কালিশুরী পুলিশ ফাঁড়িতে বিধিমালা ভঙ্গ করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলনের নির্দেশ থাকলেও উপজেলার কালিশুরী পুলিশ ফাঁড়িতে তা মানা হয়নি।
আজ বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা প্রশাসন এ দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নিয়ম সম্পর্কে জানাতে জেলায় অভিযান চালায়।

বাউফল উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দোতলায় কালিশুরী পুলিশ ফাঁড়ির কার্যালয়। আজ দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন যেভাবে হয়, সেভাবেই উত্তোলন করা হয়েছে জাতীয় পতাকা। শুধু জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নির্ধারিত খুঁটির সঙ্গে ছোট আকারের একটি কালো পতাকা সংযোজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া সরেজমিনে উপজেলা সদর, কালাইয়া, নুরাইনপুর, কালিশুরী বন্দর এলাকার প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে দেখা গেলেও কোনোটিতেই বিধি অনুসরণ করা হয়নি। অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জানালার সঙ্গে, ছোট লাঠির সঙ্গে কিংবা প্লাস্টিকের ছোট টুকরার সঙ্গে বাঁকা করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২-তে (সংশোধিত ২০১০) জাতীয় পতাকা ব্যবহারের বিধিবিধান আছে। জাতীয় পতাকা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের নিদর্শন। তাই সব সরকারি ভবন, অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভবনে সব কর্মদিবসে পতাকা উত্তোলনের বিধান রয়েছে। তা ছাড়া শহীদ দিবস ও জাতীয় শোক দিবসে বা সরকার প্রজ্ঞাপিত অন্যান্য দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার বিধান করা হয়েছে। অর্ধনমিত রাখতে হলে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম হলো, অর্ধনমিত অবস্থায় উত্তোলনের আগে পতাকাটি পুরোপুরি উত্তোলন করে অর্ধনমিত অবস্থানে আনতে হবে এবং পতাকা নামানোর আগে পতাকাটি শীর্ষে উত্তোলন করে নামাতে হবে।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, আজকের দিনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত অর্থাৎ পতাকার প্রস্থের সমপরিমাণ নিচু করে উত্তোলন করতে হবে। জাতীয় কোন দিবসে কীভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হয়, সেই নিয়ম না জানাটা খুবই দুঃখজনক। আইনের দৃষ্টিতে এটা অপরাধ। পরবর্তী সময়ে এ ব্যাপারে অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

বাউফল আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এ ওয়াই এম কামারুজ্জামান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘জাতীয় দিবসগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের নামে জাতীয় পতাকাকে নিয়মিত অপমান করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আইনের প্রয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’