ধেয়ে এল কমলা রঙের ঝড়!
হঠাৎ কমলা রঙে ঢেকে গেল পুরো শহর। চিত্তাকর্ষক এমন ঘটনা শহরবাসী দেখেনি আগে। কেউ কেউ ছবি তুলতে শুরু করলেন। তবে সবার মনেই অজানা এক আতঙ্ক। কিন্তু কেন?
কারণ, হঠাৎ শহরের এই রূপ পরিবর্তনের পেছনে কোনো উৎসব কাজ করেনি। কাজ করেছে প্রাকৃতিক ঝড়। হ্যাঁ, ধুলোর ঝড়। যার কারণে মঙ্গলবার বিকেলে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কুইন্সল্যান্ডের কারভিলা শহরের মানুষ শহরের এই রংবদলের দৃশ্য দেখল। তবে এ ঝড়ে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। গাছপালার সামান্য ডালপালা ভেঙেছেমাত্র। কিছু কিছু ঘরবাড়ির সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, এই ধুলোঝড়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে শেয়ার করতে থাকে কারভিলার বাসিন্দারা। শহরটিতে প্রায় ৩ হাজার ৩০০ লোকের বসবাস। শহরটির আবহাওয়া তুলনামূলক শুষ্ক ও গরম হওয়ার ফলে স্বাভাবিক কারণেই একটি শক্তিশালী ঝোড়ো হাওয়ার শঙ্কা করে আসছিল সেখানকার আবহাওয়া অফিস। ঝোড়ো হাওয়া ঠিকই এল। কিন্তু ধুলো আর রোদ মিলে তাতে লেগেছে রঙের ছোঁয়া। যেমনটি ফুটে ওঠে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ব্যুরো হেরি ক্লার্কের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘আমরা কুইন্সল্যান্ডের পশ্চিম অংশে আরও কিছু ধুলোঝড় দেখেছিলাম। কারণ, এ এলাকাটি শুষ্ক ও গরম। কিন্তু আজকের এ ধুলোঝড় সত্যিই চিত্তাকর্ষক। কয়েক বছরের মধ্যে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি।’
হেরি ক্লার্কের হিসাবমতে, এই ঝড়ের বিস্তৃতি ছিল ২০০ কিলোমিটার। আর এর গতিবেগ ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়ার এই বিপর্যয়ের কারণে সেখানে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বিমান চলাচল বন্ধ থাকে।
শহরটির বাসিন্দাদের ভাষ্য, এ দৃশ্য তাঁদের কাছে বিস্ময় হিসেবে ধরা দিয়েছে। বজ্রপাতের শব্দ শুনে তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তবে এ দৃশ্য যে তাঁদের একদম ভোগায়নি তা কিন্তু নয়। যেমনটি বললেন সেখানকার বাসিন্দা পেইজি ডোনাল্ড। তিনি বলেন, ‘ধুলোয় আমাদের চোখ একদম ঢেকে যায়।’
কারভিলার আরেক বাসিন্দা সনজা স্ট্রিট তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, ‘আমি সকালবেলা শোয়ার ঘরের জানালা বন্ধ না করেই কাজে বেরিয়ে পড়ি। কিন্তু এখন রুমের যে অবস্থা, তা ওয়াশিং মেশিন দিয়েও পরিষ্কার করা সম্ভব কি না সন্দেহ আছে।’ সনজা স্ট্রিট তাঁর এই ফেসবুক স্ট্যাটাসের সঙ্গে একটি ছবিও পোস্ট করেন। যাতে দেখা যায় তাঁর বিছানা চাদর ধুলোয় ঢেকে আছে।
কারভিলার পুলিশ বলছে, এই ধুলোঝড় কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। এতে বাড়িঘরের সামান্য ক্ষতি হয়েছে।