সামাজিক সমস্যা সমাধানে দৃষ্টান্ত হতে পারে বাংলাদেশ

প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপচারিতায় সফররত ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রেসিডেন্ট কেভিন জে জেনকিন্স
প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপচারিতায় সফররত ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রেসিডেন্ট কেভিন জে জেনকিন্স

ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট কেভিন জে জেনকিন্স বলেছেন, শিশু ও তরুণদের যুক্ত রেখে শিক্ষা ও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের সাফল্য প্রশংসনীয়। বাংলাদেশের এ সাফল্য বিশ্বের নানা প্রান্তের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।
লন্ডনভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট কেভিন জে জেনকিন্স গতকাল রোববার দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এ অভিমত দিয়েছেন। বাংলাদেশের মাঠ পর্যায়ে ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্মকাণ্ড দেখতে চার দিনের সফরে কেভিন জেনকিন্স গত শুক্রবার ঢাকায় আসেন। গতকাল তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তিনটি প্রকল্প পরিদর্শনের ফাঁকে তিনি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন।
বগুড়া ও খুলনার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে কেভিন জেনকিন্স জানান, এখানে শিশু ও তরুণদের একসঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে সামাজিক সমস্যা দূর করার প্রয়াস অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এর মাধ্যমে শিশুদের স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত আর বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। এ সাফল্য অন্য জায়গায় দৃষ্টান্ত হিসেবে অনুসরণ করা যেতে পারে।
কেভিন জেনকিন্স বলেন, ‘নিজেদের জীবন আর দেশের গুণগত পরিবর্তনের ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যয় আমাকে অবাক করেছে। নিজের জীবনে গুণগত পরিবর্তন দেশের জন্য ভালো কিছু করার তাগিদ এখানকার মানুষের মাঝে লক্ষ্য করেছি। চারপাশের নানা অসংগতি নিয়ে সমালোচনায় তারা আগ্রহী নয়, বরং তারা কী করতে পারে এ নিয়েই তাদের মূল আগ্রহ। জীবনের ইতিবাচক দিক নিয়েই তারা ভাবতে ও কাজ করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষের এ দিকটা আমাকে আগ্রহী করেছে।’
পেশাগত জীবনের পুরো সময়টা কেভিন জেনকিন্স যুক্ত ছিলেন বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডে। কানাডিয়ান এয়ারলাইনসের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অবসরের পর যোগ দেন ওয়ার্ল্ড ভিশনে। তিনি জানান, একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কানাডা ওয়ার্ল্ড ভিশনের পরিচালনা বোর্ডে ১০ বছর কাজ করেন। সে সময় মাঠ পর্যায়ের সফরে সংস্থার কাজ ও কর্মীদের ভূমিকা তাঁকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ওয়ার্ল্ড ভিশন মানুষের জীবনে গুণগত যে পরিবর্তন এনেছে, তা তাঁকে উৎসাহিত করেছে।
পাঁচ বছর ধরে ওয়ার্ল্ড ভিশনের প্রধানের পদের দায়িত্বটা ভালোই উপভোগ করছেন কানাডার এ নাগরিক। কেভিন জেনকিন্স বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্টারন্যাশনালের সহকর্মীদের মতো এমন আবেগপূর্ণ ও করুণাময় লোকজনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আগে হয়নি। শুরুতে মনে হয়েছিল, ওয়ার্ল্ড ভিশনের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করছি। ব্যবসার জগৎ ছাড়ছি, দেশ ছেড়ে যাচ্ছি (কানাডা থেকে যুক্তরাজ্যে)। পাঁচ বছর পর বুঝতে পারছি, আমার ত্যাগটা অদৃশ্য। বরং যে মানুষগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সারা জীবন উৎসর্গ করছে, তাদের ত্যাগটাই অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কাজেই ব্যক্তিগতভাবে ওয়ার্ল্ড ভিশনের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি সন্তুষ্ট।’