ছোট্ট জোনাকিটা নিভেই গেল

ছোট্ট এইটুকুন এক জোনাকি। আপন ঘরে আলো ছড়াতে চেয়েছিল। কিন্ত আপনজনদের দ্বন্দ্ব তাকে নিজের মতো করে জ্বলতে দিল না। না হলো মায়ের কাছে ঠাঁই, না থাকতে পারল বাবার বুকে। ছোট্ট জোনাকিটা শেষে নিভেই গেল।

গতকাল শুক্রবার রাতে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার টালিভাঙা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের ভাষ্য, ঘরে থাকা কীটনাশক শুধু নিজেই খাননি ওই গ্রামের আবুল হোসেন (৩৫), খাইয়েছেন তিন বছরের মেয়ে জোনাকিকেও।

রাত ১০টার দিকে অচেতন অবস্থায় বাবা ও মেয়েকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। রাত সাড়ে ১০টায় শিশু জোনাকি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। শিশুটির বাবা মো. আবুল হোসেনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ঢাকা মেডিকেলের পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানান।

হাসপাতালে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় মো. আবুল হোসেনের ছোট ভাই মো. রমজানের। তিনি বলছেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে একই গ্রামের পাপিয়াকে বিয়ে করেন মো. আবুল হোসেন। তাঁদের মধ্যে প্রেম ছিল। বছর তিনেক আগে তাঁদের ঘরে জোনাকির আগমন। সপ্তাহ খানেক আগে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হলে পাপিয়া রাগ করে তাঁর বাবার বাড়ি চলে যান। জোনাকিকে আবুল হোসেনের কাছেই রেখে যান। জোনাকির কান্নাকাটি সহ্য করতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার আবুল হোসেনের পরিবারের লোকজন পাপিয়াদের বাড়িতে যান তাঁকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু পাপিয়ার বাবা সুরুজ মিয়া জানান, তাঁর মেয়ে আর ওই বাড়িতে যাবে না। আবুল হোসেনের পরিবারের লোকজন সেদিন ফিরে আসেন। এরপর গতকাল সকালে জোনাকিকে তার মায়ের কাছে রেখে আসেন আবুল হোসেনের পরিবারের কয়েকজন সদস্য। এতেও কিছু হয়নি, বরং গতকাল বিকেলেই জোনাকিকে তার বাবার বাড়ি দিয়ে যান পাপিয়ার পরিবারের লোকজন।

তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে পাপিয়া কিংবা তাঁর পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মো. রমজানের ভাষ্য, তাঁর ভাই এই অপমান সইতে না পেরে ঘরে থাকা কীটনাশক নিজে খান এবং সন্তানকেও খাওয়ান। এরপর অচেতন অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে আসা হলে জোনাকি মারা যায়।

এসআই বাচ্চু বলেন, তদন্তের পর আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।