নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ভবনে তালা

শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবন-১-এর সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: প্রথম আলো
শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবন-১-এর সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: প্রথম আলো

এক ছাত্রের সাময়িক বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও গ্রন্থাগার ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল আটটার দিকে এ তালা ঝোলানো হয়। বেলা দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবন-১-এর সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে উপাচার্যের একক সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুষদ খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৪ মার্চ বিকেলে একদল শিক্ষার্থী উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে আগের ২৫টি বিভাগের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না করে নতুন বিভাগ না খোলাসহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন। এসব দাবিদাওয়া নিয়ে উপাচার্যের দপ্তরের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যসহ কয়েকজন শিক্ষকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ওই ঘটনার জের ধরে শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাত শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে হৃদয় সাহা নামের এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়, যিনি ঘটনার দিন ক্যাম্পাসে ছিলেন না বলে দাবি করা হচ্ছে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁরা প্রক্টরের দপ্তরে গিয়ে হৃদয় সাহাকে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান। এ সময় প্রক্টর মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমানের সঙ্গে তাঁদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। প্রক্টর এ সময় সেখানে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আগেও প্রক্টর বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তা ছাড়া কোনো কাজে তাঁর দপ্তরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা পায় না।

শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে একাডেমিক ভবন ১ ও ২, হাজী ইদ্রিস মিলনায়তন ও গ্রন্থাগারের প্রধান ফটকে তাঁরা তালা দিয়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

প্রক্টর মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, তিনি গতকাল বিকেলে রেজিস্ট্রারের দপ্তরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তা শিক্ষার্থীদের দাবির আগে, ব্যক্তিগত কারণে। তাই এখন তাঁর কোনো দায়দায়িত্ব নেই। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কখনোই তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেননি। তাঁরা বহিষ্কার হওয়া সাত ছাত্রের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে গতকাল তাঁর কাছে আসেন। এ নিয়ে নানা কথাবার্তার পর শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার বিকেল পর্যন্ত সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন। সেই সময়ও তো এখনো শেষ হয়নি।

রেজিস্ট্রার মো. মমিনুল হক প্রক্টরের পদত্যাগপত্র পাওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত উপাচার্য নেবেন বলে জানান রেজিস্ট্রার।