প্রসূতির জরায়ুসহ শিশুর মাথা বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় চিকিৎসকদের তলব

অস্ত্রোপচারের সময় প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলা ও নবজাতককে দ্বিখণ্ডিত করার অভিযোগ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, সিভিল সার্জন ও পাঁচ চিকিৎসককে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৪ এপ্রিল তাঁদের আদালত হাজির হতে বলা হয়েছে।

এই বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এ আদেশ দেন। অপর পাঁচ চিকিৎসক হলেন করুণা রানী কর্মকার, নাসরিন আক্তার, আয়েশা আফরোজ, জানেবুল হক ও দিলরুবা শারমিন।

‘জরায়ুসহ শিশুর মাথা বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ’ এবং ‘সিজার কালে ডাক্তার দুই খণ্ড করলেন নবজাতককে’ শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী ফারহানা ইসলাম খান, আনিসুল হাসান ও শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

পরে আইনজীবী আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

জানা যায়, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের সফিক কাজীর স্ত্রী জুলেখা বেগম (৩০) প্রসববেদনা নিয়ে ১৭ মার্চ রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন দুপুরে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. করুণা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল ওই অপারেশন করে।

প্রসূতির স্বামী সফিক কাজী জানান, প্রসববেদনায় ছটফট করলেও ডাক্তাররা তাঁর স্ত্রীর সিজারের কোনো উদ্যোগ নেননি। পরদিন দুপুরে জুলেখার সিজার করা হয়। এ সময় নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন এবং জুলেখার জরায়ু কেটে ফেলা হয়।

গতকাল শনিবার এ ঘটনা জানাজানি হলে গণমাধ্যমে তা উঠে আসে। এ ঘটনায় হাসপাতালসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক তোলপাড় হয়।

হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, প্রসূতির জীবন রক্ষার্থে ডাক্তাররা অপারেশন করে গর্ভের সন্তান দুই খণ্ডে বের করে আনেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ সঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।