গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মেয়র পদে মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। কারা দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন, এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানান জল্পনাকল্পনা।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আগামী ১৫ মে ভোট গ্রহণ হবে। গত সোমবার বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন। সিটির গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে এরই মধ্যে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনের মাধ্যমে প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন অনেকে। একেকজন কাউন্সিলর প্রার্থী পছন্দের মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছেন। চলছে জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার কাজ। গাজীপুর আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও গত সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নান।
মেয়র এম এ মান্নানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী মো. ওয়াসিম জানান, তিনি কয়েক দিন ধরে অসুস্থ। তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসান উদ্দিন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মনোনয়ন পেলে বা না পেলেও এটা আমার শেষ নির্বাচন। দল ছাড়াও আমার ব্যক্তিগত অনেক সমর্থক আছে। আমি টঙ্গী পৌরসভার প্রথম দুবারের মেয়র ছিলাম। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি স্বাধীনতার পক্ষের, তেমনি ইসলামি চেতনাবোধকে নিজের মধ্যে জাগ্রত রাখতে চাই। দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা করছি।’
মেয়র পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক টঙ্গী পৌরসভার মেয়র আজমত উল্লা খান এবং গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে আজমত উল্লা খান ও জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী। ৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা হওয়ার কথা। সেদিনই মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।
আজমত উল্লা খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আশা করি দল আমাকেই মনোনয়ন দেবে। তা ছাড়া দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দলের সভাপতি শেখ হাসিনা অনেক আগেই আমাকে সমর্থন দিয়ে মাঠে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ পাওয়ার পর থেকে সিটি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছি।’
গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী দুজন। কয়েক দিনের মধ্যে মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক আছে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে কাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক বলেন, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। ওই বৈঠকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।
২০ জনের মনোনয়নপত্র উত্তোলন
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডের সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।