নড়াইলে নববর্ষ ঘিরে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

পয়লা বৈশাখের মেলাকে সামনে রেখে মাটি দিয়ে জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। ছবি: প্রথম আলো
পয়লা বৈশাখের মেলাকে সামনে রেখে মাটি দিয়ে জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। ছবি: প্রথম আলো

আর মাত্র কয়েক দিন পরই পয়লা বৈশাখ। লাল-সাদা পোশাকের আধিক্য আর নানা রঙের পণ্য নিয়ে জায়গায় জায়গায় বসবে বৈশাখী মেলা। আর এসব মেলাকে সামনে রেখে ঘুম নেই মৃৎশিল্পীদের। মেলার চাহিদা মেটাতে ও মাটির তৈরি জিনিসপত্র দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দিন-রাত ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে তাঁদের।

দেশের অন্যান্য এলাকার মতো নড়াইলের মৃৎশিল্পীরা একই রকম ব্যস্ততায় সময় পার করছেন। তাঁরা মনের মাধুরী মিশিয়ে মাটির তৈরি খেলনার আকৃতি দিচ্ছেন। চাকার মাধ্যমেও মাটিকে বিভিন্নভাবে আকৃতি দেওয়া হয়। তারপর সেই মাটির জিনিসপত্র আগুনে পুড়িয়ে শক্ত করা হয়।

সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের রঘুনাথপুর, মাইজপাড়া ইউনিয়নের আতশপাড়া, লোহাগড়া উপজেলার কুন্দশি, কালিয়া উপজেলার ছোট কালিয়াসহ বেশ কয়েকটি পালপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কেউ মাটি গুঁড়া করে কাদা করছেন, কেউ মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করছেন, কেউবা বিভিন্ন পশুপাখির আকৃতি তৈরিতে ব্যস্ত। আবার কেউ মাটির তৈরি জিনিসপত্রে রং-তুলি দিয়ে হরেক রকমের নকশা করছেন। অনেকে সদ্য তৈরি পণ্যগুলো রোদে শুকাচ্ছেন। এক দল ব্যস্ত রোদে শুকানো জিনিসগুলো আগুনে পোড়ানোর কাজে। এসব কাজে স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা তাদের বাবা-মাকেও নানাভাবে সাহায্য করছে।

পালপাড়াগুলোয় শিল্পীদের মধ্যে বেশিসংখ্যক পণ্য তৈরির ইতিবাচক প্রতিযোগিতাও লক্ষ করা গেছে।

সদর উপজেলার আতশপাড়ার মৃৎশিল্পী গোবিন্দ পাল জানান, এবারের বৈশাখী মেলার পণ্য তৈরির জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি সংগ্রহ করেছেন। পণ্যগুলো মেলায় সরবরাহ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হবে।

ছোট কালিয়ার মৃৎশিল্পী গোপাল পাল বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও তিনি বৈশাখী মেলার জন্য হরিণ, গরু, ঘোড়া, হাতি, খরগোশ, উটপাখি, হাঁস, বক, টিয়া, গন্ডারসহ নানা ধরনের প্রাণীর আকৃতি তৈরি করেছেন।

একই এলাকার আরেক শিল্পী রমা রানী পাল জানান, খেলনার পাশাপাশি তিনি ফুলের টব, সোনালি রঙের পাতিল, ঢোল, মগ, জগ, লবণ বাটি, বদনা ইত্যাদি তৈরি করছেন।